লাইফস্টাইল

শিশুর ওজন কমে গেলে বিপদ, জানুন প্রতিকার

লাইফস্টাইল ডেস্ক

শিশুর সঠিক শারীরিক বৃদ্ধি এবং সুস্থতা নিশ্চিত করতে তার খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু অনেক সময় শিশুর ওজন কমে যায় যা তার স্বাস্থ্যের জন্য এক মারাত্মক সংকেত হতে পারে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে আমাদের সচেতন হতে হবে।

কারণ- 

অপর্যাপ্ত পুষ্টি: 

শিশুর খাবারে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব তার শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে।

পেটের সমস্যা: 

খাদ্য হজমে সমস্যা, পেটের রোগ বা খাদ্য অ্যালার্জি শিশুর ওজন কমাতে পারে।

অসুস্থতা: 

ভাইরাল ইনফেকশন, ডায়রিয়া বা জ্বরের মতো রোগের কারণে শিশুর ওজন দ্রুত কমে যেতে পারে।

মানসিক চাপ: 

উদ্বিগ্ন বা মানসিক চাপের ফলে শিশুর খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে, যার প্রভাব ওজনের উপর পড়তে পারে।

জেনেটিক কারণে: 

কিছু শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি বা ওজন কম হওয়ার জন্য বংশগত কারণও থাকতে পারে।

গর্ভকালীন পুষ্টির অভাব: 

মাতৃগর্ভে পুষ্টির অভাব থাকলে শিশুর জন্মের পর ওজন কম হওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

ওজন কমে গেলে যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়- 

অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা দুর্বলতা: শিশুটি ক্রমাগত ক্লান্তি অনুভব করতে পারে এবং সাধারণ কাজেও অসুবিধা হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট: শরীরে হিমোগ্লোবিনের অভাবে অক্সিজেনের যোগান ঠিকমতো না পৌঁছালে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

খাবারে অরুচি: শিশুর আগের মতো খাওয়ার প্রতি আগ্রহ না থাকলে তার শরীরে পুষ্টির অভাব হতে পারে।

ত্বকের পরিবর্তন: ত্বক ফ্যাকাসে বা নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে।

শারীরিক বৃদ্ধি থেমে যাওয়া: শিশুর উচ্চতা বা শারীরিক গঠন বৃদ্ধিতে বাধা আসতে পারে।

শিশুর ওজন কমে গেলে মারাত্মক বিপদ হতে পারে- 

শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সমস্যা: যথাযথ পুষ্টি না পেলে শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে দেরি হতে পারে, যা তার দৈনন্দিন কাজের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়া: পুষ্টির অভাবে শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সে সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

হৃৎপিণ্ডের সমস্যা: দীর্ঘ সময় ধরে পুষ্টির অভাব হৃৎপিণ্ডের কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা ভবিষ্যতে হৃৎপিণ্ডের রোগের কারণ হতে পারে।

হরমোনাল সমস্যা: শরীরের হরমোনের ভারসাম্যহীনতা শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

শিশুর ওজন কমে গেলে যে পদক্ষেপ নেয়া উচিত

চিকিৎসকের পরামর্শ-  

শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পরামর্শের জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার দিন: 

লাল মাংস, শাকসবজি, ডাল, সাদা মাছ ও বাদাম শিশুর শরীরে রক্তের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

ভিটামিন সি গ্রহণ: 

সিট্রাস ফল, টমেটো, স্ট্রবেরি ইত্যাদি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার শিশুকে খাওয়ান, যা আয়রনের শোষণ বাড়াতে সহায়তা করবে।

ফোলেট ও ভিটামিন বি১২: 

এই দুটি ভিটামিন শিশুর শারীরিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কলা, ডিম, শাকসবজি এবং মটরশুঁটি এর ভাল উৎস।

বিশ্রাম ও মানসিক স্বাস্থ্য: 

শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তার মানসিক চাপ কমানোর দিকে বিশেষ নজর দিন। যদি প্রয়োজন হয়, মনোবিদের সাহায্য নিতে পারেন।

যদি শিশুর অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট বা বুকের ব্যথা, মাথা ঘোরা বা অবসন্নতা, প্রচণ্ড ক্লান্তি বা দুর্বলতা ও প্রচণ্ড মাথাব্যথা বা স্মৃতিভ্রংশ ইত্যাদি লক্ষণগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক দেখা দেয় তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। 

এসকে//