আইন-বিচার

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় চার আসামি ট্রাইব্যুনালে

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় চার আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে তাদের প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

হাজির হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম এবং ছাত্রলীগকর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশ।

এই মামলায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন পলাতক। গেল ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল পলাতক আসামিদের হাজির হতে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা। প্রতিবেদনে ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। তদন্ত শেষে ১৫ জুন ট্রাইব্যুনাল আগামী ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলে। পাশাপাশি শুনানির জন্য ২৬ জুন দিন ধার্য করা হয়।

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হোসাইন, বি এম সুলতান মাহমুদ ও এস এম মঈনুল করিম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন ও দেলোয়ার হোসেন সোহেল।

প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন।

তিনি আরও জানান, আবু সাঈদকে গুলি করার মুহূর্তের একটি ভিডিও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরপরই দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হয়।

পরবর্তীতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। টানা আন্দোলন ও সংঘর্ষে সরকারি হিসাব অনুযায়ী সাড়ে আটশ জন নিহত হন। ১৯ জুলাই কারফিউ দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় সরকার। শেষ পর্যন্ত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা ভারত পালিয়ে যান।

এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী ইমরান চৌধুরী আকাশসহ আরও অনেকে সহায়তা ও উস্কানি দিয়েছেন।

আবু সাঈদ হত্যাসহ গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত বিভিন্ন সহিংস ঘটনায় জড়িতদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হচ্ছে। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল ট্রাইব্যুনালটি।

 

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #আবু সাঈদ #আবু সাঈদ হত্যা মামলা #বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় #আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল