সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি হাটটি যেন এক জলপাইয়ের রাজ্য। হাটের যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই জলপাইয়ের স্তুপ। আশ্বিনের শেষ দিক থেকে শুরু হয়ে মাঘ মাস পর্যন্ত চলে এই হাটের জমজমাট পরিবেশ। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই বাজারে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। চারপাশে যতদূর চোখ যায়—সবুজ জলপাইয়ে ভরে গেছে হাটের প্রতিটি কোণা।
সরেজিমেন দেখা যায়, কেউ বস্তা নামাচ্ছেন, কেউ ঝুড়িতে জলপাই গুছিয়ে রাখছেন, আবার কেউ দাম ঠিক করছেন পাইকারদের সঙ্গে। চারদিকে ছড়িয়ে আছে টাটকা জলপাইয়ের গন্ধ। সব মিলিয়ে হাটজুড়ে ছড়িয়ে থাকে কৃষকের পরিশ্রম আর আনন্দের এক রঙিন চিত্র।
প্রতি মন জলপাই বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার বেচাকেনায় মুখর থাকে এই বাজার। রবিবার ও বৃহস্পতিবার—এই দুই হাটবারে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়, তবে জলপাইয়ের মৌসুমে হাটবার ছাড়াও বেচাকেনা চলে প্রায় প্রতিদিনই।
চাষিরা বলছেন, আগের মতো এখন আর জলপাই বিক্রি নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। বাজারে চাহিদা বাড়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন তারা। জলপাই এখন তাদের জীবিকার প্রধান ভরসা।
বাগবাটির জলপাইয়ের খ্যাতি এখন জেলার সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। ফরিদপুর, ভোলা, টাঙ্গাইল, নাটোর, বগুড়া—এমনকি ঢাকায় নিয়মিত যাচ্ছে বাগবাটির জলপাই। মান ভালো হওয়ায় এখান থেকেই জলপাই যাচ্ছে কারওয়ান বাজারসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারেও।
এখান থেকে জলপাই কিনে তা দিয়ে আচার তৈরি করেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় বেশ কয়েকটি কোম্পানি।
সিরাজগঞ্জের মাটি ও আবহাওয়া জলপাই চাষের জন্য বেশ উপযোগী। গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে জলপাইয়ের আবাদ বেড়েছে চোখে পড়ার মতোভাবে। আগামী মৌসুমে আরও বেশি জমিতে চাষ হবে বলে আশা করছেন জলপাই চাষিরা।
আই/এ