লাইফস্টাইল

ক্যান্সার ঠেকাতে কিছু দারুণ টিপস !

লাইফস্টাইল ডেস্ক

ক্যান্সার হলো এক ধরনের মারাত্মক রোগ যা শরীরের কোষগুলির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজনের মাধ্যমে শুরু হয়। এটি যখন ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে তখন চিকিৎসা কঠিন হয়ে ওঠে। তবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় এবং চিকিৎসকদের পরামর্শে জানা গেছে, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার অভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ক্যান্সার :

ক্যান্সারের শুরুতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীরের কোষ যখন স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না, তখন ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হতে পারে। এই সময় আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে সচেতন থাকা প্রয়োজন। এই কারণে চিকিৎসকদের মতে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সঠিক জীবনযাপন অত্যন্ত জরুরি।

চিকিৎসা ও ক্যান্সার প্রতিরোধ :

ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিভিন্ন শাখার সাহায্য নেয়া হয়। যেমন- 

• সার্জারি (Chirurgery): ক্যান্সার টিউমার অপসারণ করতে অস্ত্রোপচার করা হয়।

• কেমোথেরাপি (Chemotherapy): ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়।

• রেডিয়েশন থেরাপি (Radiation Therapy): রেডিয়েশন ব্যবহার করে ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি থামানো হয়।

• ইমিউনোথেরাপি (Immunotherapy): শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করা হয়।

খাদ্যাভ্যাসের ভূমিকা :

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু বিশেষ খাদ্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। 

• ফল ও শাকসবজি: এসব খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি রোধ করে এবং শরীরকে বিষাক্ত পদার্থ থেকে মুক্ত রাখে।

• অলিভ অয়েল: এটি ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি রোধে সহায়ক এবং শরীরের জন্য উপকারী।

• হলুদ (Curcumin): হলুদে থাকা কুরকিউমিন উপাদান ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঠেকাতে সাহায্য করে।

• কম চর্বিযুক্ত খাদ্য: অতিরিক্ত চর্বি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কম চর্বিযুক্ত খাবার ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

শারীরিক ব্যায়াম :

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। ব্যায়াম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। অতিরিক্ত ওজন শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, তাই ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।

তামাক ও মদ পরিহার :

তামাক সেবন ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি ফুসফুস, মাউথ, গলা, কিডনি, লিভারসহ নানা ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তামাক এবং অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। গবেষণায় জানা গেছে, যারা তামাক সেবন করেন তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

মানসিক চাপ ও ক্যান্সার :

মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করতে পারে। মানসিক শান্তি এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক। ঘুমের সমস্যাও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, তাই ভালো মানসিক স্বাস্থ্য এবং পর্যাপ্ত ঘুম নেয়া জরুরি।

ত্বকের যত্ন ও সূর্যের প্রভাব :

সূর্যের অতিরিক্ত রশ্মি ত্বকের ক্যান্সার বিশেষ করে মেলানোমা ঘটাতে পারে। অতএব, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা এবং ত্বকে তিল বা কোনও অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম : 

শরীরের টিস্যু পুনর্গঠনে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরকে প্রস্তুত রাখে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, তামাক ও মদ পরিহার, মানসিক শান্তি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সঠিক চিকিৎসা নেয়া এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও জরুরি। 

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ক্যান্সার