দেশজুড়ে

টিকটক থেকে বিয়ের আসর, কিশোর প্রেমের নাটকীয় পরিণতি

বায়ান্ন প্রতিবেদন

ছবি: প্রতীকী ছবি

টিকটকে শুরু প্রেমালাপ, তারপর রেস্তোরাঁয় দেখা- সবই যেন সিনেমার দৃশ্য! কিন্তু ১৫ বছরের সেই কিশোর–কিশোরীর প্রেমের গল্পে হঠাৎ প্রবেশ করল স্বজনেরা। মুহূর্তেই বদলে গেল প্রেমিক–প্রেমিকার রোমান্স, মোড় নিল নাটকীয় পরিণতির দিকে।

এরপর ছেলের (১৫) স্বজনদের কিছু না জানিয়েই কিশোর–কিশোরীকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যকে ডেকে বসানো হলো বিয়ের আসর।

কিন্তু খবর চেপে রাখা গেল না বেশিক্ষণ। ছেলেটির (১৫) এক বন্ধুর কাছ থেকে ঘটনা জানতে পারেন তার স্বজনেরা। সঙ্গে সঙ্গেই তারা থানায় খবর দেন। এরপর শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে সেই কিশোর–কিশোরীকে।

ছেলেটির বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় আর মেয়েটির বাড়ি পাশের জুড়ী উপজেলায়। ছেলেটি কুলাউড়ার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়েটি অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করেনি। এ ঘটনায় গতকাল রাতে ছেলের মা বাদী হয়ে জুড়ী থানায় মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেন, গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে ছেলের সন্ধান পাচ্ছিলেন না। তার মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। ওই দিন রাতে ছেলের এক বন্ধু মুঠোফোনে তাদের জানায় তাকে সঙ্গে নিয়ে জুড়ী উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁয় মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। পরে মেয়ের স্বজনেরা সেখানে গিয়ে তাদের জোর করে বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে ওই এলাকার ইউপি সদস্যের উদ্যোগে এক ইমাম দিয়ে ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দেন। মুঠোফোনে ধারণ করা এসব ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সে ছেলের স্বজনদের কাছে পাঠায়।

গতকাল রাত ১১টার দিকে জুড়ীর জায়ফরনগর ইউনিয়নে মেয়েটির এক আত্মীয়ের বাড়িতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। সেখান থেকে ছেলে ও মেয়েকে উদ্ধার করে জুড়ী থানায় নেওয়া হয়। রাতেই ছেলের মা বাদী হয়ে মেয়ের বাবা, মা ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের নাম উল্লেখে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে মামলা করেন।

জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ছেলের বন্ধুর মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে জোর করে ছেলেকে ধরে নেয়া ও ছেলে–মেয়েকে বাল্যবিবাহ করানোর দৃশ্য দেখা গেছে। ছেলে ও মেয়েকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে। আদালত তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করে পরবর্তী নির্দেশনা দেবেন। এ ঘটনায় জড়িতরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #টিকটক #প্রেম #বাল্যবিবাহ