গর্ভধারণ ক্ষমতা বা প্রজননক্ষমতা নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি, ওষুধ এবং জীবনযাত্রার অভ্যাস গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। এই প্রভাব সাধারণত শরীরের হরমোনাল ভারসাম্য পরিবর্তন অথবা প্রজনন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। কিছু ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় এসব চিকিৎসা নেয়ার ফলে গর্ভধারণ ক্ষমতা স্থায়ীভাবে কমে যেতে পারে।
হরমোনাল কন্ট্রাসেপটিভস (Hormonal Contraceptives)
জন্মনিরোধক পিল, ইনজেকশন বা ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহারের ফলে শরীরের হরমোনের স্তর পরিবর্তিত হয়, যার কারণে ডিম্বাশয়ে ডিম তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর ফলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়। তবে, পিল বন্ধ করার পর সাধারণত প্রজনন ক্ষমতা ফিরে আসে।
কেমোথেরাপি (Chemotherapy)
ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কেমোথেরাপি ডিম্বাশয়ের কোষ এবং অন্যান্য প্রজনন সংশ্লিষ্ট কোষের ক্ষতি করে, যা গর্ভধারণ ক্ষমতা স্থায়ীভাবে কমিয়ে দিতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে প্রজনন ক্ষমতা পুনরুদ্ধার হতে পারে।
স্পিরোনোল্যাকটন (Spironolactone)
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি অ্যান্টি-অ্যান্ড্রোজেন ঔষধ, যা শরীরের পুরুষ হরমোনের (অ্যান্ড্রোজেন) স্তর কমিয়ে ডিম্বাশয়ের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
এন্টি-অ্যান্ড্রোজেন থেরাপি (Anti-androgen Therapy)
PCOS এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত এই থেরাপি ডিম্বাশয়ের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে, যা গর্ভধারণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
স্টেরয়েড (Steroids)
স্টেরয়েড ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরের প্রদাহ কমানো হলেও এটি হরমোনের ভারসাম্য পরিবর্তন করতে পারে, যা গর্ভধারণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
জীবনযাত্রার অভ্যাস -
অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মাদক বা অ্যালকোহল সেবন গর্ভধারণের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। এসব অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং অতিরিক্ত শারীরিক বা মানসিক চাপ শরীরের প্রজনন ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
গর্ভধারণ ক্ষমতা কমানোর পর প্রতিকার
গর্ভধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পর কিছু প্রতিকার গ্রহণ করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে :
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং নিয়মিত ব্যায়াম প্রজনন স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ধূমপান ও মাদক পরিহার:
এসব অভ্যাস পরিহার করলে প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মানসিক শান্তি:
মানসিক চাপ কমালে গর্ভধারণের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
সতর্কতা -
গর্ভধারণ ক্ষমতা কমানোর জন্য ব্যবহৃত ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সঠিক পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে এই ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এসকে//