আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডে নাটকীয় মোড়!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০১৭ সালে ইয়েমেনের এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করার দায়ে মৃত্যুদণ্ড ঘোষিত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ারের ফাঁসির দিন আজ (১৫ জুলাই) হওয়ার কথা ছিল। তবে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ এই শাস্তি আপাতত স্থগিত করেছে।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এবং এএনআই জানিয়েছে, ভারতের সরকারের সক্রিয় ও সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে।

সরকারি সূত্রের বরাতে এএনআই জানিয়েছে, এই স্থগিতাদেশ নিমিশা প্রিয়ার পরিবারকে সময় দিয়েছে যাতে তারা নিহত ব্যবসায়ীর পরিবারের সঙ্গে এমন একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারে, যা উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে।

তালাল আব্দো মাহদি নামে নিহত ওই ব্যক্তি নিমিশা প্রিয়ার ব্যবসায়ীক অংশীদার ছিলেন। ইয়েমেনে কোনো ব্যবসা করতে হলে সে দেশের কোনো নাগরিককে সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক, তাই ওই ব্যক্তির সঙ্গে মিলে নিমিশা প্রিয়া তার ক্লিনিক চালু করেছিলেন।

২০১৭ সালে তালাল আব্দো মাহদির টুকরো টুকরো করা দেহ একটি পানির ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপরই সেই হত্যার অভিযোগে নিমিশা প্রিয়াকে গ্রেফতার করা হয় এবং সে দেশের আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

ভারতীয় কর্মকর্তারা ইয়েমেনের জেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রসিকিউটরের দফতরের সঙ্গে নিয়মিত কূটনৈতিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। নিমিশাকে বাঁচানোর একমাত্র রাস্তা হলো যদি ওই নিহত ব্যক্তির পরিবার 'দিয়াহ' বা 'ব্লাড মানি'-র বিনিময়ে ওই নার্সের প্রাণভিক্ষা দিতে রাজি হয়! নিমিশার আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকরা ইতোমধ্যেই মাহদির পরিবারকে 'ব্লাড মানি' দিতে ১ মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছেন এবং পরিবারকে সেটা 'অফার'ও করা হয়েছে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলায় অবশ্য সোমবারই ভারত সরকারের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, নিহতের পরিবারের কাছ থেকে এখনো কোনো আশার আলো পাওয়া যায়নি।

সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, নিমিশা প্রিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টায় সরকার সব রকম চেষ্টা চালালেও "ভারত এক্ষেত্রে আসলে কতদূর কী করতে পারে, তার একটা সীমা আছে – আর আমরা সেই সীমায় পৌঁছে গেছি!"

অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি সোমবার কার্যত মেনেই নিয়েছিলেন, দক্ষিণ ভারতের কেরালার ওই নার্সের জীবন আদৌ বাঁচানো যাবে কি না, সেটা এখন ভারত সরকারের ওপর আর নির্ভর করছে না।

শীর্ষ আদালতকে তিনি জানান, ‘যত রকম চ্যানেলে চেষ্টা চালানো যায় আমরা তার সবই চেষ্টা করেছি। ইয়েমেনের একজন 'প্রভাবশালী শেখে'র মাধ্যমেও চেষ্টা চালানো হয়েছে, আরও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে – কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি ।

এরপরেই মঙ্গলবার জানা গেল যে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দিন আপাতত পিছিয়ে দিয়েছে ইয়েমেনি কতৃপক্ষ।

সূত্র: বিবিসি

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ইয়েমেন #ভারত #নার্স নিমিশা প্রিয়া