ইরান-ইসরাইল সংঘাত যখন চরমে, ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিল ইরান। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, নতুন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই জলপথ দিয়ে কোনো জাহাজ চলাচল করতে পারবে না।
শনিবার (১৪ জুন) সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স অ্যাকাউন্টে দেওয়া বিবৃতিতে ইরানি বাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘আমরা হজরত আব্বাস (আ.)-এর অনুসারী। আমাদের অনুমতি ছাড়া একটি মাছিও আমাদের জলসীমা পার হতে পারবে না।’
তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই এমন পদক্ষেপ নেয় ইরান। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে যে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ আরও কঠোর হতে যাচ্ছে এবং বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহকে চাপের মুখে ফেলতে কৌশলগতভাবে হরমুজ প্রণালিকে ব্যবহার করছে তারা।
সামরিক বাহিনীর আরেকটি বার্তায় বলা হয়, ‘যারা বলেছিল ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র থামাবে, তারা এখন কোথায়? আজ বিশ্ব দেখবে মধ্যপ্রাচ্যেকে আসল সিংহ!’
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথগুলোর মধ্যে হরমুজ প্রণালি অন্যতম। পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই সংকীর্ণ প্রণালির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৯ কিলোমিটার। দৈনিক বিশ্বে সমুদ্রপথে যে পরিমাণ তেল পরিবহন হয়, তার অন্তত ২০ শতাংশ যায় এই পথ দিয়ে—যা বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
আগেও বহুবার এই প্রণালিকে কৌশলগত চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে ইরান। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে তারা প্রায়শই হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দেয়। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো প্রণালির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে নিয়মিত নৌবাহিনী মোতায়েন রাখে।
সাম্প্রতিক ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকট আরও চরমে পৌঁছাতে পারে।
এমএ//