উত্তেজিত স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা
খালেদা জিয়ার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র কিনলেন বিএনপি নেতা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৩ (সদর) আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিলো দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। কিন্তু আকস্মিকভাবে সেই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বিএনপি নেতা ও দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। একারনে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছেন। তবে জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, দলের হাই কমান্ডের নির্দেশ নিয়েই তিনি মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
বেগম খালেদা জিয়া এই আসনে প্রার্থী হবেন সেই লক্ষ্যে গেল ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র কিনেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি। তবে হঠাৎ করেই রোববার দুপুরে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও দিনাজপুর পৌরসভার টানা তিনবারের মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম।
রোববার দুপুরে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তিনি। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক মামুনুর রশিদ কচি, সাবেক পৌর কাউন্সিলর রেহাতুল ইসলাম, মতিবুর রহমান বিপ্লবসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে রোববারই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়। বেগম খালেদা জিয়ার টিপসই সম্বলিত এই মনোনয়পত্র জমা দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল ও সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি। জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে, জেলা বিএনপির নেতাকর্মী ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র সংগ্রহের খবর জেনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তখন সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেছেন, ‘সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, জাহাঙ্গীর মনোনয়ন পেলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে কি ঢাকা থেকে আমাদের কিছু জানানো হতো না? মনোনয়নপত্র জমা দেবেন না। এমন কোনো নির্দেশনা ঢাকা থেকে তারা পাননি। তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বেগম খালেদা জিয়াই পরিপূর্ণভাবে সেখানকার প্রার্থী।’
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি বলেছেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখবেন যে আসলে বিষয়টি কি। তাদের দায়িত্ব ছিলো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া। তারা, তাদের দায়িত্বটুকু পালন করেছেন।
এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘দলের উচ্চ পর্যায় থেকে তাকে মনোনয়ন ফরম কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একারনেই তিনি মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।
দিনাজপুর-৩ আসনে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নেবেন বেগম খালেদা জিয়া। তার শৈশব কেটেছে এই জেলাতে। এই জেলাতেই পড়াশোনা করেছেন তিনি। এর আগে, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন খালেদা জিয়ার বড় বোন প্রয়াত খুরশিদ জাহান হক। এবার বড় বোনের আসনেই প্রার্থী হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।