কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নে শিয়ালের কামড়ে দুই বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (০১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উত্তর রাজকুন্তী পুঁথিপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু হুমায়রা গাড়ী চালক হুমায়ুন কবিরের মেয়ে।
জানা গেছে, রাতে মায়ের কোলে বসে খেলতে খেলতে হুমায়রা বড় চাচা গোলাম মোস্তফার ঘরে যেতে চায়। মা তাকে চাচার ঘরে দিয়ে ফিরে আসেন। কিছুক্ষণ পর হুমায়রা মাকে ডাকতে ডাকতে ঘর থেকে বের হয়। একা মায়ের কোলে ফেরার পথে ঘরের উঠান অতিক্রম করার সময় অন্ধকারে ওঁত পেতে থাকা একটি শিয়াল শিশুটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে শিয়াল হুমায়রাকে গলায় কামড়ে ঝোপের আড়ালে টেনে নিয়ে যায়।
প্রাথমিকভাবে কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও, কিছু সময় পরে হুমায়রা না ফেরায় মা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। চাচার ঘরে গিয়ে জানা যায়, হুমায়রা অনেক আগে ঘর থেকে বের হয়ে গেছে। পুরো পরিবারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং শুরু হয় ব্যাকুল খোঁজাখুঁজি। অবশেষে ঘরের পেছনের ঝোপে শিশুটির ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া যায়, দেহে নখের আঁচড় ও অন্যান্য ক্ষত রয়েছে। এ ধরনের ঘটনা এলাকায় পূর্বেও ঘটেছে। গত রমজানে ইফতারের পর আরাফ নামে আরেক শিশুকে উঠান থেকে টেনে নিয়ে শিয়াল আক্রমণ করেছিল। সেই শিশুর দেহও পরে জঙ্গলে পাওয়া গিয়েছিল।
হুমায়রার চাচী সমলা আক্তার বলেন, এশার আযানের পর হুমায়রাকে তার চাচার ঘরে দিয়ে আসে তার মা। কিছুক্ষণপর আবার মায়ের কাছে আসতে চায়। এরপর সবার অজান্তে ঘর থেকে একা একা কখন বের হয়ে এসেছে আমরা কেউ বলতে পারিনা। অনেকক্ষণ পর হুমায়রার মা এসে মেয়েকে খুঁজতে লাগলে সকলে ঘর থেকে বের হয়। পরে ঘরের পেছনে গিয়ে হুমায়রার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। পুরো শরীরে নখের আঁচড়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে মাংস নাই, কামড়ের দাগ।
হুমায়রার বাবা হুমায়ুন কবির বলেন, আমি ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা চালিয়ে সংসার চালাই। এশার আযানের পর ফোন করে মেয়ের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। আমার তিনটা ছেলে আর একটা মেয়ে ছিল। মেয়ের আবদারে মা আমার ভাই মোস্তফার ঘরে দিয়ে আসে। সেখান থেকে একা একা বের হয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শিশু হুমায়রার এমন মৃত্যুর সংবাদ আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এসি//