আন্তর্জাতিক

জোহরান মামদানির ‘ট্রানজিশন টিমে’ নারীর আধিপত্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনে জয়ের পরদিন থেকেই দায়িত্ব গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জোহরান মামদানি। গতকাল বুধবার (০৫ নভেম্বর) তিনি তার ‘ট্রানজিশন টিম’ বা ক্ষমতা গ্রহণকারী দলের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। পাঁচ সদস্যের এই দলে উপস্থিত সবাই নারী।

৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মামদানিকে তিনি নিজেকে একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি আগামী ১ জানুয়ারি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন।

স্থানীয় সময় গতকাল সকালে কুইন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রানজিশন দলের নাম ঘোষণা করেন জোহরান মামদানি। এর নেতৃত্ব দেবেন লানা লেপোড। তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করবেন। কো–চেয়ার হিসেবে থাকবেন নিউইয়র্কের সাবেক ফার্স্ট ডেপুটি মেয়র মারিয়া তোরেস-স্প্রিংগার। আরও আছেন নিউইয়র্কের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের সাবেক প্রধান লিনা খান, ইউনাইটেড ওয়েজের প্রেসিডেন্ট ও সিইও গ্রেস বোনিয়া এবং সিটির স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিষেবাবিষয়ক সাবেক ডেপুটি মেয়র মেলানি হারজোগ।

সংবাদ সম্মেলনে জোহরান মামদানি বলেন, ‘আগামী মাসগুলোতে আমার দল ও আমি এমন একটি সিটি হল গড়ে তুলব, যেটি (আমাদের) নির্বাচনী প্রচারের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে সক্ষম হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলব; যা সমানভাবে সক্ষম ও সহানুভূতিশীল হবে, সততা দিয়ে পরিচালিত হবে এবং ততটাই কঠোর পরিশ্রম করতে প্রস্তুত থাকবে; যতটা পরিশ্রম এ শহরকে নিজেদের বাড়ি মনে করা কোটি কোটি নিউইয়র্কবাসী করে থাকেন।’

গত মঙ্গলবার রাতে জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর গতকাল টেলিভিশনে নিজের প্রথম সাক্ষাৎকারে জোহরান মামদানি দ্রুত দায়িত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ১ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে প্রস্তুত থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের হাতে ৫৭ দিন আছে।’

নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানি। একই সঙ্গে তিনি প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী নিউইয়র্কের মেয়র। এক শতাব্দীর বেশি সময়ের মধ্যে তার চেয়ে কম বয়সী মেয়র নিউইয়র্ক সিটি আর পায়নি।

নিউইয়র্ক সিটির দায়িত্ব গ্রহণ করে জোহরান মামদানি প্রশাসনকে শুরুতেই বড় ধরনের বাধার মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং নির্বাচনী প্রচারের সময় তিনি (জোহরান) মেয়র হলে নিউইয়র্ক সিটির জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল সরবরাহ বন্ধ করাসহ নানা হুমকি দিয়েছেন।

জোহরান মামদানি নিজেও স্বীকার করেছেন, তাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা সামলানো ও শত্রুভাবাপন্ন ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন কাজ করা। তবে তার দৃঢ় বিশ্বাস, এর মধ্যেও তিনি নিজের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবেন।

জোহরান মামদানি জানিয়েছেন, তিনি রাজনৈতিক বিভাজনকে ভুলে গিয়ে নিউইয়র্কবাসীকে একত্রিত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন। তার মতে, শহরের সব বাসিন্দাই রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি যাই হোক না কেন, একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। আগামী দিনগুলোতে তিনি ডেপুটি মেয়র এবং বিভিন্ন এজেন্সির কমিশনারদের নাম প্রকাশ করবেন।

মেয়র আরও জানান, ‘‘কিছু নাম হবে পরিচিত, কিছু নতুন, কিন্তু সবাই পুরোনো সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন উদ্যোগ গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন।’’

তিনি আরও বলেন, “আগামী ১ জানুয়ারি, যখন আমাদের শহর নতুন প্রশাসনের শপথ উদযাপন করবে, তখনই আমাদের শহরে একটি নতুন যুগের সূচনাও আমরা উদযাপন করি।”

 

এসি//

 

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #নিউইয়র্ক #জোহরান মামদানি