সুদানের দারফুর অঞ্চলে আবারও ভয়াবহ গণহত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) জানিয়েছে, স্যাটেলাইট চিত্র, ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে দেখা গেছে—প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থলের রক্তের দাগ ও মরদেহের চিহ্ন এতটাই ব্যাপক যে তা মহাকাশ থেকেও ধরা পড়ছে।
গবেষণাগারটি জানায়, দারফুরের বহু এলাকায় মাটির রং অস্বাভাবিকভাবে লালচে হয়ে গেছে, যা রক্তপাত ও মরদেহের উপস্থিতির সঙ্গে মিলে যায়। এই স্থানগুলোর বেশিরভাগই হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা ও সরকারি সেনাবাহিনী (এসএএফ)-এর ঘাঁটির আশপাশে।
এইচআরএল-এর গবেষক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড বলেন, আরএসএফ বাহিনী শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই হাজার হাজার মরদেহের চিহ্ন শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, “দারজা উলা এলাকায় আরএসএফ সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরুষদের আলাদা করে হত্যা করেছে। আমরা এমন দৃশ্য দেখেছি, যেখানে একদিন আটক অবস্থায় মানুষকে দাঁড় করানো হয়েছিল, আর পরের দিন একই জায়গায় রক্তমাখা মরদেহের স্তূপ পড়ে ছিল।”
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, আরএসএফ ঘাঁটির কাছাকাছি সব যানবাহন একযোগে স্থান ত্যাগ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এতে ইঙ্গিত মেলে যে সরকারি বাহিনী পিছু হটলেও সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে গেছে। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে আল-ফাশের শহরটিকে ‘দুঃসহ মানবিক সংকটের কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর চলতি বছরের শুরুতেই জানিয়েছিল, দারফুরে আরএসএফ বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে। ইয়েলের গবেষক রেমন্ড সতর্ক করে জানিয়েছে, দুই দশক আগে শুরু হওয়া দারফুর গণহত্যার শেষ অধ্যায় এখন চলছে। যারা পালাতে পারেনি—বিশেষ করে নারী ও শিশুরা—তারা এখন পরবর্তী টার্গেট।”
এমএ//