ভৈরব উপজেলাকে জেলা ঘোষণার দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। এ সময় নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ২০ যাত্রী আহত হন। যাত্রীদের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে পরে ট্রেনটি ছেড়ে দেয় স্থানীয়রা।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ট্রেন আটকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, জেলা ঘোষণার দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সকালে রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। এসময় তারা ‘জেলা জেলা জেলা চাই ভৈরব জেলা চাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর কিশোরগঞ্জ নো মোর’, ‘ইন্টেরিম সরকার জেলা মোদের দরকার’, ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
যাত্রী দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে কর্মসূচি শেষ করে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে আসলে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে এলোপাতাড়ি পাথর নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) নামে এক যাত্রীসহ ২০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন।
এ কর্মসূচির কারণে পাঁচটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। ভৈরবে দীর্ঘক্ষণ আটকে ছিল কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেন নরসিংদীর দৌলতকান্দি স্টেশনে আটকে ছিল। তিতাস ট্রেন মেথিকান্দা ও কর্ণফুলী ট্রেন খানাবাড়ি স্টেশনে আটকে ছিল। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চট্টলা ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তাল শহর স্টেশনে আটকে ছিল।
এসময় আটকে থাকা যাত্রীদের মাঝেও চরম উত্তেজনা দেখা যায়।
ব্লকেড কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ১৫ দিন লাগাতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেয়ার পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের টনক নড়েনি। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে ২৬ অক্টোবর সড়কপথ ব্লকেড, ২৭ অক্টোবর রেলপথ ব্লকেড ও ২৮ অক্টোবর নৌপথ ব্লকেড কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল নৌপথ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে সর্বস্তরের জনতা। সরকার জেলার দাবি মেনে না নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথ বন্ধ করে জেলার দাবিতে কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
পাথর নিক্ষেপের বিষয়ে ছাত্রনেতা শাহরিয়ার বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন বানচাল করতে একটি মহল পাথর নিক্ষেপ করেছে। আমরা কর্মসূচি শেষে যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তাৎক্ষণিক ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ওসি সাইদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেছি। পাথর নিক্ষেপের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
আই/এ
