ফ্রান্সে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার দায়ে আলজেরীয় নারী দাহিয়া বেনকিয়েরেডকে প্যারোলবিহীন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ফরাসি দণ্ডবিধির অধীনে এটি সবচেয়ে কঠোর শাস্তি, এবং ইতিহাসে প্রথমবার একজন নারী এই রায় পেয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) আদালত এই রায় ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত ২৭ বছর বয়সী বেনকিয়েরেড ২০২২ সালে প্যারিসে ১২ বছর বয়সী লোলা ডেভিয়েটকে হত্যা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন।
এই নৃশংস ঘটনা পুরো ফ্রান্সকে শোকস্তব্ধ করেছিল। পাশাপাশি, যেহেতু বেনকিয়েরেডের ফ্রান্সে থাকার বৈধ অনুমতি ছিল না, এটি দেশটিতে অভিবাসনবিরোধী উত্তেজনাও সৃষ্টি করেছিল।
রায়ে বিচারক বলেন, অপরাধটি ছিল ভয়াবহ নিষ্ঠুরতার নিদর্শন এটি প্রকৃত নির্যাতন এবং সম্পূর্ণ অমানবিকতা।
তিনি আরও যোগ করেন, এই সহিংস ও বর্ণনাতীত ঘটনার ফলে শিকার ও তার পরিবারের মানসিক ক্ষতি অপূরণীয়।
২০২২ সালের অক্টোবরে লোলা ডেভিয়েট নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ বেনকিয়েরেডকে আটক করে। পরে লোলার বাবা-মায়ের কর্মস্থল ভবনের লবিতে রাখা একটি ট্রাংকের ভেতর তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রসিকিউশন পক্ষ যুক্তি দেয়, এই অপরাধের চরম গুরুত্ব ও ভুক্তভোগীর পরিবারের দুর্ভোগের গভীরতা বিবেচনায় আসামিকে অপরিবর্তনীয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া উচিত। আদালত সেই প্রস্তাবই বহাল রাখে।
রায় ঘোষণার পর লোলার মা ডেলফিন ডেভিয়েট বলেন, আমরা ন্যায়বিচারে বিশ্বাস রেখেছিলাম, এবং আজ তা পেয়েছি।
লোলার ভাই থিবো ডেভিয়েট বলেন, আমরা আমার বোনের স্মৃতিকে পুনরুদ্ধার করেছি, আমরা সত্যকে পুনরুদ্ধার করেছি।
১৯৯৪ সালে এই সর্বোচ্চ সাজা প্রবর্তনের পর থেকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন পুরুষ এই শাস্তি পেয়েছেন। এবার প্রথমবারের মতো একজন নারীও সেই তালিকায় যুক্ত হলেন।
এসি//