ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) কর্তৃক জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কঠোরভাবে কার্যকর করবে কানাডা। এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ।
গতকাল সোমবার (২০ অক্টোবর) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইটমস অব ইসরাইল এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ব্লুমবার্গ কর্তৃক প্রচারিত এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। নেতানিয়াহু কানাডায় এলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
ব্লুমবার্গকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে কার্নিকে জিজ্ঞেস করা হয়, কানাডা কি আইসিসির পরোয়ানা কার্যকর করবে? জবাবে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “হ্যাঁ,” নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারে তিনি প্রস্তুত। কার্নি আরও বলেন,‘ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াটা তার অগ্রাধিকার ছিল। কিন্তু, এটাই শেষ নয়।’
১৯৪৭ সাল থেকেই কানাডা দুই রাষ্ট্রের মধ্যে চলমান সংঘাত সমাধানের নীতি মেনে চলছে উল্লেখ করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'ফিলিস্তিনকে এখন স্বীকৃতি দেওয়ার কারণ নেতানিয়াহুর সরকার জাতিসংঘের নীতিমালা লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে। ১৯৪৭ সাল থেকে কানাডার মেনে চলা সরকারি নীতির বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়েছে।'
প্রসঙ্গত,২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদ’ লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ঐতিহাসিক মামলা দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা । তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর মামলাটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
তবে কানাডার আগে নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, স্লোভেনিয়া বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ও সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) তিন দফায় অন্তর্বর্তী নির্দেশনা দিয়ে ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে, সামরিক অভিযান স্থগিত রাখতে এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা না দিতে নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য, এ বছরের ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে কানাডা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। একই দিনে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালও একই ঘোষণা দেয়। পরবর্তী দুই দিনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, মোনাকো এবং অ্যান্ডোরা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি জানায়।
এসএইচ//
