জুবিন গার্গ নামটা শুধু আসামের নয়, গোটা ভারতের সংগীতপ্রেমীদের কাছে এক আবেগের নাম। ১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয় রাজ্যের তুরায় জন্ম নেওয়া এই শিল্পী ছোটবেলা থেকেই গান ও বাদ্যযন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মাত্র উনিশ বছর বয়সে তার প্রথম অ্যালবাম অনামিকা (Anamika) প্রকাশিত হয়। আর তখন থেকেই তিনি সংগীতজগতে আলাদা জায়গা করে নেন।
হিন্দি, বাংলা, অসমিয়া সহ প্রায় চল্লিশটা ভাষায় গান গেয়েছেন জুবিন। তার কণ্ঠে “ইয়া আলী ”গানটা এখনও মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। শুধু গায়ক নন, তিনি সুরকার, গীতিকার, অভিনেতা। অনেক গুণে গুণান্বিত। তিনি প্রায় বারোটা বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। ক্যারিয়ারে জাতীয় ও আঞ্চলিক র্পযায়ে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সবচেয়েও বড় প্রাপ্তি ছিল মানুষের ভালোবাসা।
শুধু গানে সীমাবদ্ধ ছিলো না জুবিনের জীবন। আর্ত মানবতার সেবায় দাড়াতেন মানুষের পাশে। বন্যার সময় ত্রাণ কার্যক্রম হোক, কিংবা সংস্কৃতি সংরক্ষণের আন্দোলন সবখানেই সক্রিয় ছিলেন তিনি।তার এই সমাজ সেবার কারনে তিনি আসামের মানুষের কাছে শুধু একজন শিল্পী নন। একজন সামাজিক কণ্ঠস্বরও ছিলেন।
কিন্তু তার জীবন চলার গতিপথ থেমে গেল গত ১৯ সেপ্টেম্বর। সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করার সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এই গুণী শিল্পী। তার চলে যাওয়ায় শুধু আসাম নয়, পুরো ভারতজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তিনি চলে গেছেন ঠিকই। কিন্তু রেখে গেছেন তার গান, তার সুর আর তার ভরাট কণ্ঠ। এসব গুণ তাকে বাঁচিয়ে রাখবে মানুষের হৃদয়ে। জুবিন গার্গ ছিলেন, আছেন, থাকবেন।