আন্তর্জাতিক

ইসরাইলি হামলায় আরও ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অবরুদ্ধ গাজার অঞ্চলে ইসরাইলি বাহিনীর হামলা গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। এই সময়ের মধ্যে ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন মানবিক সহায়তা গ্রহণ করতে গিয়ে। এছাড়া অনাহারে মারা গেছেন আরও তিনজন। ফলে গত কয়েক মাসে গাজার অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বুধবার (২৭ আগস্ট) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

গাজার সবচেয়ে বড় শহর গাজা নগরী এবং তার আশপাশের অঞ্চলে ইসরাইলি সেনারা আরও গভীরে প্রবেশ করেছে, যার ফলে শহরটির একাধিক এলাকা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়ের জন্য ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু গাজার সীমিত জায়গায় আশ্রয় নেয়ার কোন সুযোগ নেই, ফলে হাজার হাজার মানুষ বিপদে পড়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় গাজা নগরীর জায়তুন ও সাবরা এলাকায় এক হাজারেরও বেশি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, যার ফলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গাজার পূর্বাঞ্চলে একটি জনবহুল বাজারে ইসরাইলি হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন।  আল-আহলি আরব হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে দুই নারী ছিলেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা হতাশা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন।

গাজার উত্তরাংশের আস-সাফতাওয়ি এলাকা থেকে প্রায় ১০ লাখ মানুষকে গাজার দক্ষিণ দিকে ‘কনসেন্ট্রেশন জোন’-এ স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। ইসরাইলি বাহিনী তাদের বাধ্য করছে এসব এলাকায় চলে যেতে, যেখানে তাদের আশ্রয়ের কোনও সুযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে তারা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাচ্ছে।

গাজার বাসিন্দা এবং লেখক সারা আওয়াদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো প্রতিদিনই কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হচ্ছে—নিজ ঘরে বসে অবিরাম বোমাবর্ষণের ঝুঁকি নেবেন, নাকি আবারও উদ্বাস্তু হতে হবে। আমি ভাবি, কেন আমাকে পালিয়ে যেতে হবে? কেন আমি আমার ঘর ছাড়ব অথচ ঘর তো এখানেই?”

জাতিসংঘের মানবিক দপ্তর (OCHA) এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, গাজায় খাদ্য সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি ও মৃত্যুর হার ক্রমেই বেড়ে চলেছে।  গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছেন আরও তিনজন ফলে ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০৩ ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যার মধ্যে ১১৭ জনই শিশু।

এদিকে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো এই সংকট মোকাবিলায় সহায়তা পাঠানোর চেষ্টা করছে, তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সমর্থনে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে পর্যন্ত ২ হাজার ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #গাজা #ইসরাইল