ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রীরা গাজার জনগণকে অনাহারে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ নিয়ে সেনাপ্রধান আইয়াল জামিরের সঙ্গে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। শনিবার রাতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই ঘটনা ঘটে। আলোচনার মূল বিষয় ছিল “অপারেশন গিদিওন’স চ্যারিয়টস–২”—যেখানে গাজা সিটিতে ব্যাপক হামলা ও গণ-উচ্ছেদের পরিকল্পনা রয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ বৈঠকে বলেছেন, “যারা গাজা ছাড়বে না, তাদের পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিন। ক্ষুধায় মরতে দিন অথবা আত্মসমর্পণে বাধ্য করুন। এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
কিন্তু সেনাপ্রধান জামির এর বিরোধিতা করে বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতায় সময় ও পরিকল্পনা জরুরি। তিনি জানান, সেনারা ইতোমধ্যে খান ইউনিস ও রাফাহসহ একাধিক স্থানে অভিযান চালাচ্ছে।
এ সময় জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির হস্তক্ষেপ করে সেনাপ্রধানকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন তোলেন, “আপনি কি সামরিক আইন উপদেষ্টার ভয়ে কাজ করতে পারছেন না?” স্মোত্রিচও অভিযোগ করেন, জামির রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশ মানছেন না। জবাবে ক্ষুব্ধ জামির বলেন, “আপনারা কিছুই বোঝেন না। ব্রিগেড বা ব্যাটালিয়ন পরিচালনা কীভাবে হয়, তা জানেন না। এসব করতে সময় লাগে।”
চ্যানেল–১২’র প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরা নীরব থাকেন। তারা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের চাপের প্রসঙ্গ তুলে দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
টাইমস অব ইসরাইলের খবরে জানানো হয়েছে, মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার আবার বৈঠকে বসবে। সেখানে নতুন সামরিক অভিযান এবং সম্ভাব্য বন্দি বিনিময় নিয়ে আলোচনা হবে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৬২ হাজার ৬০০’রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা উপত্যকা, আর সেখানে এখন চলছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া ইসরাইলকে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
এসি//