মাথাব্যথা যখন অতিরিক্ত তীব্র হয়ে ওঠে তখন এটি একজন ছাত্রের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে চিন্তা করার কিছু নেই। এমন কিছু সহজ কৌশল রয়েছে যা মাথাব্যথা অনুভব করলেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে এবং আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম করবে।
মাথাব্যথার প্রকৃত কারণ :
মাথাব্যথা সাধারণত দুই ধরনের হয়: টেনশন হেড্যাক্স এবং মাইগ্রেন। টেনশন হেড্যাক্স একটি চাপের মতো অনুভূতি সৃষ্টি করে, যা মাথার চারপাশে অনুভূত হয়। অপরদিকে, মাইগ্রেন সাধারণত একপাশে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং চোখের সামনে আলোর ঝলক বা বমি বমি ভাবও দেখা দিতে পারে।
এই দুই ধরনের মাথাব্যথা কখনো-কখনো আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে যেমন পড়াশোনায়, তেমনই জীবনযাত্রায় বাঁধা সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত চাপ, দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা, খাবারের অভাব বা ঘুমের অপ্রতুলতা এগুলো সব কিছুই মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
মাথাব্যথার সময়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার কৌশল
যখন আপনার মাথা প্রচণ্ড ব্যথা করছে, তখনও কিছু ছোট পদক্ষেপ আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এমন কিছু কৌশল রয়েছে যেগুলি মাথাব্যথার মাঝে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়ক।
বিরতি নিন
অত্যধিক পড়াশোনা করলে এবং মনোযোগ হারিয়ে গেলে মাথাব্যথা বাড়তে পারে। প্রতি ৩০ মিনিটে একবার বিরতি নেওয়া উচিত। ৫-১০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে ফিরুন। এছাড়া একটু হাঁটাহাঁটি বা হালকা স্ট্রেচিং করতে পারেন, যা আপনার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে।
পানি পান করুন
হাইড্রেশন মাথাব্যথা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানি পান করা মাথাব্যথা দূর করার একটি সহজ, কিন্তু কার্যকরী উপায়। নিশ্চিত করুন, আপনি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করছেন।
হালকা ব্যায়াম
বিশেষজ্ঞরা বলেন, হালকা ব্যায়াম মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক। যোগব্যায়াম বা কিছু হালকা স্ট্রেচিংও শরীরের উত্তেজনা কমিয়ে দেয় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে। এটি মাথাব্যথার তীব্রতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
স্বাভাবিক আলো এবং বাতাসে পড়ুন
স্ক্রিনে দীর্ঘ সময় চোখ রাখলে চোখের চাপ বাড়ে এবং মাথাব্যথা আরও তীব্র হতে পারে। তাই বই পড়ার সময় স্বাভাবিক আলোয় বসুন, যতটা সম্ভব সূর্যের আলোর নিচে পড়ুন এবং খোলামেলা জায়গায় থাকার চেষ্টা করুন।
প্রয়োজনীয় পুষ্টি
খাবারও মাথাব্যথার একটি বড় কারণ হতে পারে। অনেক সময় আমরা অতিরিক্ত চাপের মধ্যে পড়ে খাবার খেতে ভুলে যাই। সঠিক পুষ্টি গ্রহণ মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। বাদাম, ফলমূল, সবজি, ভিটামিন B, সেলেনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার মাথাব্যথা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
বিশ্রাম এবং ঘুম
ঘুমের অভাব মাথাব্যথার একটি প্রধান কারণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। এটি কেবল মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করবে না, বরং আপনার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাও বজায় রাখবে।
পরামর্শ :
মাথাব্যথা যদি নিয়মিত সমস্যা হয়ে ওঠে এবং তীব্রতা অনেক বেশি হয়, তবে তা উপেক্ষা না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাইগ্রেন বা অন্য কোনও জটিল সমস্যা থাকলে চিকিৎসক উপযুক্ত ওষুধ এবং থেরাপি নির্ধারণ করবেন, যা মাথাব্যথার তীব্রতা কমাতে সহায়ক হবে।
মাথাব্যথা যদি জীবনের পথচলায় অন্তরায় হয়ে ওঠে তবে সহনশীলতা এবং সঠিক কৌশল প্রয়োগ করা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে মাথাব্যথা সহ্য করেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে এবং জীবনের চলমান যাত্রায় টিকে থাকতে কিছু কার্যকরী কৌশল অবলম্বন করতে হবে। যদি আপনি এই কৌশলগুলো অনুসরণ করেন তবে আপনি মাথাব্যথার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবেন।
সূত্র :
• Mayo Clinic
• WebMD
এসকে//