চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্স (PLAAF) তাদের অত্যাধুনিক পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান জে-২০ এর নতুন সংস্করণ 'জে-২০এস' প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটি একটি দুই আসনের বিমান যা একজন পাইলটের সঙ্গে একজন ওয়েপন সিস্টেমস অফিসার (WSO) বহন করতে সক্ষম। এই উন্নত সংস্করণটির মাধ্যমে যুদ্ধের সময় মিশন ভাগাভাগি ও পরিচালনায় উন্নতি ঘটবে এবং দীর্ঘমেয়াদি অপারেশনে আরও কার্যকর সহায়তা প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর দীর্ঘ পাল্লার ক্ষমতা এবং উন্নত প্রযুক্তি একে শুধুমাত্র যুদ্ধের সময় নয়, এমনকি দূরবর্তী অপারেশনেও কার্যকর করে তুলবে। চীনের দাবি, এই জে-২০এস এর দূরত্ব ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের এফ-২২ ও এফ-৩৫ থেকে প্রায় দ্বিগুণ।
এটি প্রথমবারের মতো হেবেই প্রদেশের কাংঝোউ শহরে অবস্থিত পিএলএএএফ-এর ১৭২তম এয়ার ব্রিগেডে মোতায়েন করা হয়েছে। এই ব্রিগেডটি প্রশিক্ষণ এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি উভয় ধরনের কাজ করে থাকে এবং ২০১৮ সাল থেকে তারা এক আসনের জে-২০ ব্যবহার করে আসছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দুই আসনের জে-২০এস এর কৌশলগত ব্যবহার এক আসনের জে-২০ থেকে অনেকটাই ভিন্ন, তাই এটি বিশেষ ইউনিটে মোতায়েন করা হয়েছে। এটি শুধু প্রশিক্ষণ বিমান নয় বরং, একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিমান হিসেবেও ব্যবহারের উপযোগী। ভবিষ্যতে এই ড্রোন বা উইংম্যান বিমানগুলোর পরিচালনাও করতে সক্ষম হতে পারে। কয়েকটি প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এর মাধ্যমে এটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ বা আকাশভিত্তিক কমান্ড পোস্ট হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে, যা বিমানবাহিনীর শক্তি বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এ বিষয়ে বইয়ের লেখক আব্রাহাম আব্রামস মন্তব্য করে বলেন, ’China’s Stealth Fighter: The J-20 Mighty Dragon and the Growing Challenge to Western Air Dominance’। আগামী দিনে একক আসনের চেয়ে দুই আসনের জে-২০ বেশি দেখা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ২০১০ সালের দিকে রাশিয়ার ফ্ল্যাঙ্কার সিরিজের যুদ্ধবিমানগুলো এক আসন থেকে দুই আসনে রূপান্তরিত হয়েছিল। এই জে-২০এস এর প্ল্যাটফর্মে ভিত্তি করে ভবিষ্যতে স্ট্রাইক ও ইলেকট্রনিক অ্যাটাক মিশন এর জন্য আরও উন্নত ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘জে-২০’ বাহিনী তৈরি করছে। এ কারণে দুই আসনের ‘জে-২০এস’ এর উৎপাদন আরও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।
উল্লেখ্য, অবশেষে গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে জে-২০এস প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে। কয়েক বছরের মধ্যে এটি পিএলএএফ এর অফিসিয়াল ইউনিট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে, যা চীনের আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতায় নতুন এক যুগের সূচনা করেছে।
এসকে//