ইন্দোনেশিয়ার একটি আগ্নেয়গিরিতে ট্রেকিংয়ের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ব্রাজিলের তরুণ পর্বতারোহী জুলিয়ানা মেরিনস। তবে মৃত্যুর আগে তিনি মাকে উদ্দেশ্য করে যে আবেগঘন বার্তা পাঠিয়েছিলেন, সেটিই এখন নাড়া দিচ্ছে লাখো মানুষের হৃদয়।
২৬ বছর বয়সী জুলিয়ানা ছিলেন দুঃসাহসিক অভিযানের প্রতি গভীরভাবে আগ্রহী। নতুন অভিজ্ঞতার খোঁজে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন হাজারো মাইল দূরে, ইন্দোনেশিয়ার ভয়াল মাউন্ট রিনজানিতে।
পাহাড়ে ওঠার ঠিক আগে ফিলিপাইন থেকে মাকে পাঠানো বার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘মা, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।’ এই ছোট্ট বাক্যেই যেন মিশে ছিল অসীম মমতা, মায়া আর বিদায়ের ব্যথা।
২১ জুন, হাইকিংয়ের সময় রিনজানির এক বিপজ্জনক খাড়া ঢালে পা পিছলে প্রায় ৪৯০ ফুট নিচে পড়ে যান জুলিয়ানা। এরপর চারদিন তিনি খাদে আটকে ছিলেন—আশায়, ভয় আর যন্ত্রণায় কাটানো এক নিঃসঙ্গ লড়াই। উদ্ধারকাজে ড্রোন ব্যবহার করা হলেও ঘন কুয়াশা, দুর্গম পথ ও প্রতিকূল আবহাওয়া উদ্ধারকারীদের বারবার বাধাগ্রস্ত করে। শেষ পর্যন্ত, উদ্ধার করা হয় তার নিথর দেহ।
মৃত্যুর আগে মা, বাবা ও বোনের প্রতি গভীর ভালোবাসা জানিয়ে জুলিয়ানা আরও লিখেছিলেন, ‘বিদায় মুহূর্তে আমার মন ভেঙে গিয়েছিল। আমি ভয় পাই না, কিন্তু শুধু এই চিন্তায় কষ্ট পাই—তোমাদের হতাশ করবো না তো! আমি এমন এক নারীর কাছে বড় হয়েছি, যিনি আমাকে শিখিয়েছেন ভয়কে অতিক্রম করতে। আমি সেই শিক্ষা নিয়েই বাঁচি।’
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য রিনজানি আগ্নেয়গিরি প্রায় ১২ হাজার ফুট উঁচু। এখানেই জুলিয়ানার মতো আরও অনেক অভিযাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে গত মাসে এক মালয়েশীয় পর্যটকও ছিলেন।
জুলিয়ানার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আবারও প্রকৃতির ভয়ংকর রূপ আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। তবে তার রেখে যাওয়া শেষ কথাগুলো যেন জীবনের গভীরতম এক সত্য মনে করিয়ে দেয়, ভালোবাসা কখনো মরে না।
এমএ//