জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশিরা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সেলগুলোতে অর্থ পাঠাত বলে জানিয়েছেন দেশটির পুলিশ প্রধান (আইজিপি) মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল।
শুক্রবার (৪ জুলাই) মালয়েশিয়ার পুলিশ সদর দপ্তর বুকিত আমানে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কথা বলেন। এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছেন।
মালয়েশিয়া পুলিশের আইজিপি বলেন, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত ধারাবাহিক অভিযানে ওই ৩৬ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। আটকৃতরা কারখানা, নির্মাণ ও সেবা খাতে কর্মরত ছিলেন।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশিদের ওই চক্রটি অন্য বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে থেকে সদস্য বাড়াচ্ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপের মাধ্যমে ‘উগ্রবাদী মতাদর্শ’ ছড়াচ্ছিল।
মোহাম্মদ খালিদ ইসমাইল জানান, এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএসের জন্য’ অর্থ পাঠাত। মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশন অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে। তবে তারা ঠিক কত অর্থ সংগ্রহ করেছে, তা এখনও তদন্তাধীন। পুলিশের ধারণা, সদস্য ফি এবং চাঁদা থেকেই এই অর্থ এসেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘গেরাকান মিলিটান র্যাডিকাল বাংলাদেশ’ বা ‘জিএমআরবি’ নামে পরিচিত এই চক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপে সদস্য সংগ্রহ এবং উগ্র মতবাদের প্রচার করে আসছিল।
আইজিপি বলেন, তারা ধারণা করছেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব জঙ্গিদের সদস্য সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ জনের মত। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, প্রত্যেক সদস্যকে বছরে ৫০০ রিংগিত ফি দিতে হয়। তবে অনুদানের পরিমাণ নির্ভর করছে সদস্যদের ওপর।
আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক আইএস সেলগুলোর সঙ্গে এই চক্রের কোনো সংযোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও তদন্ত চলছে।
মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান বলেন, আমরা অন্যান্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করে এই জঙ্গি নেটওয়ার্ক উন্মোচনে কাজ করছি।
আটকদের মধ্যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে জাড়িত থাকার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ১৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর ১৬ জন এখনো পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি খালিদ ইসমাইল।
তবে যাদের সংশ্লিষ্টতা কম, তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর যাদের সম্পৃক্ততা বেশি, তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আইজিপি জানিয়েছেন।
আই/এ