সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থায় এখনো কোনো উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা এখনো ‘ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড স্ট্যাটিক’—অর্থাৎ স্থিতিশীল থাকলেও সংকট কাটেনি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, হাদির হৃদযন্ত্র বর্তমানে মেডিকেল সাপোর্টে সচল রয়েছে। ফুসফুস ভেন্টিলেটরের সাহায্যে কাজ করছে এবং কিডনির কার্যক্রমও চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে বজায় রাখা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে তার শারীরিক অবস্থায় নতুন কোনো ইতিবাচক বা নেতিবাচক পরিবর্তন নেই।
মস্তিষ্কে থাকা গুলির অংশ অপসারণের বিষয়ে আপাতত নতুন করে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়নি। চিকিৎসকদের মতে, গুলির অংশটি মস্তিষ্কের গভীর সংবেদনশীল এলাকায় অবস্থান করছে। এই অবস্থায় অস্ত্রোপচার করলে নিশ্চিতভাবে উন্নতি হবে—এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই; বরং এতে ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ডা. আহাদ আরও জানান, হাদিকে সিঙ্গাপুরের বাইরে যুক্তরাজ্য বা যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হলেও বর্তমান শারীরিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ভ্রমণ তার জন্য নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সম্মতি ও মতামতও গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আপাতত সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালেই হাদির চিকিৎসা চলবে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টের আওতায় রেখে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। তবে প্রতিদিন জানানোর মতো নতুন কোনো অগ্রগতি নেই।
ডা. আব্দুল আহাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাদির অবস্থা নিয়ে ছড়ানো ইতিবাচক দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো—হাদির অবস্থা এখনো গুরুতর এবং অপরিবর্তিত। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে গুজবে কান না দিয়ে ধৈর্য ধরার এবং তার সুস্থতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গেল ১২ ডিসেম্বর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা অবস্থায় ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এমএ//