ধর্ষণের জেরে স্কুলছাত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, প্রতিবেশী গ্রেপ্তার
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৪ বছরের ৮ম শ্রেনি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, ভুক্তভোগী কিশোরী বর্তমানে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান (৫৭) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আটক আব্দুস সোবহান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের রওশনপুর এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, ৫৭ বছর বয়সী আব্দুস সোবহান বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে একা পেয়ে হাত, পা ও মুখ বেঁধে জোর করে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সে। এতে ভয়ে ওই কিশোরী কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু কিছুদিন পর ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে এলাকাবাসী অভিযুক্ত সোবহানের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এলাকাবাসী ও স্থানীয়দের উদ্যোগে আজ বিকেলে সোবহানের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
স্থানীয়রা জানান, কীভাবে একজন দাদার বয়সী ব্যক্তি এমন বিবেকহীনভাবে ঘৃণ্য কাজ করতে পারলো ভাবতেই সবাই শিউরে উঠছেন। অভিযুক্ত সোবহান এর আগেও নানা অসামাজিক কাজে জড়িত থেকে জরিমানা গুনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক অপরাধ করে আসছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগী কিশোরী জানান, অভিযুক্ত সোবহান সম্পর্কে আমার দাদা হয়। তিনি প্রায়ই আমাদের বাড়িতে আসতেন। গত ৪ এপ্রিল শুক্রবারে মা-বাবা মরিচ তুলতে মাঠে গেলে সে একা ঘরে ছিল। হঠাৎ সে ঘরে ঢুকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে কাউকে কিছু না বলতে বাধ্য করে। এখন সে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ।এ ঘটনার তিনি কঠিন বিচার চান।
কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমি পাথর শ্রমিক। পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। ঘটনাটি জানতাম না। গত বৃহস্পতিবার জানতে পেরেছি মেয়েটা অন্তঃসত্ত্বা। এখন খুব চিন্তায় আছি৷ বিচার পাব কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় ভুগছি। মেয়েটা তো সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। দাদার বয়সী সোবহান আমার মেয়ের এমন সর্বনাশ করেছে। আমি তার কঠিন শাস্তি চাই। ফাঁসি না হলে এই সমাজে এ ধরনের নরপিশাচরা আরও সাহস পাবে’।
তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। ইতোমধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ধরনের সামাজিক অবক্ষয় রোধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।
ওসি মুসা মিয়া বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়েছে। অভিযুক্ত আব্দুস সোবহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আই/এ