জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আহ্বান
আওয়ামী লীগ ও জামায়াত জাতির সাথে প্রতারণা করেছে: গিয়াস আহমেদ
ধর্ম অবমাননার জন্য জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সদস্য আব্দুল লতিফ সম্রাট। বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, এবার পূজা না আসলে জামাতের আসল চেহারা কেউ বুঝতে পারতো না। ওরা ধর্ম ব্যবসায়ী। ওরা ক্ষমতার জন্য ধর্ম পরিবর্তন করতেও দ্বিধা করে না। যারা নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করছে তারা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ বলেছেন, বিএনপিই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে জাতির সব দুর্যোগময় মুহূর্তে ৭১ এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। তখন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়েই আত্মসমর্পণ করেছিলেন। ১৯৭৫ এর পট পরিবর্তনের পর, সিপাহি জনতা হাতে হাত রেখে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বন্দি দশা থেকে মুক্ত করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।
বাকশালের রাজনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বাকশালের একনায়কতন্ত্র থেকে ৭১-এর চেতনায় বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নয় বছর আন্দোলন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন।
জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং জামায়াত মিলে জাতির সাথে প্রতারণা করে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের সংসদে গিয়েছিলো। জামায়াত ১৯৯৬ সালে বিএনপির সাথে বেঈমানি করে হাসিনার সাথে হাত মেলায়। ফলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। জামাত বার বার জাতির সাথে বেঈমানি করেছে। তারা ১৯৪৭ সনে ভারতের হিন্দুত্ববাদীকে সহযোগিতা করেছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে গণহত্যা করেছে। ১৯৮৬-তে স্বৈরশাসক এরশাদকে সহযোগিতা করেছে। ১/১১ এর সময় অবৈধ সরকারকে সহযোগিতা করেছে। এখন জনগণের ভোটের অধিকার বাস্তবায়নে বিরোধিতা করছে। তারা জনগণের ভোটের অধিকারকে পাশ কাটিয়ে অনির্বাচিত সরকারের সহযোগী হিসেবে তদবির বাণিজ্য করছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি কখনোই পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করেনি। স্বৈরাচার এরশাদও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমন্ত্রণ করেছিল। ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দীন সরকারও বেগম খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় বাসানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি জনগণের ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। জেলে গিয়েছেন তবুও আপোশ করেননি।
ফ্যাসিবাদী বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী আন্দোলনে বিএনপিই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। বিএনপিকে ধ্বংস করতে লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। হত্যা, গুম খুন, ক্রসফায়ার এবং আয়না ঘরে গিয়েও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেঈমানি করেনি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জেলে গিয়েছেন, তবুও আপোশ করেননি।
২৪ এর কোটা আন্দোলনে যখন সমন্বয়করা ডিবি হারুনের ভাতের হোটেলে ভাত খেয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন। তখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একদফার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে নেতাকর্মীদের এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। জনগণ তার কথায় একদফার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২৪ এর আন্দোলনের সব কৃতিত্ব কয়েকজন ছাত্রকে দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করেছেন ডক্টর ইউনুস। ফলে দুই ছাত্র উপদেষ্টা তদবির বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন। তারা নির্বাচন বানচাল করতে জামাতের সাথে চক্রান্তে লিপ্ত। তিনি দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাওলানা ওলিউল্লাহ আতিকুর রহমান। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাইদ রহমান।