আন্তর্জাতিক

হঠাৎ থানায় এসে হাজির খুন হওয়া ব্যক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গহীন অরণ্যে পড়ে থাকা একটি আধা-পোড়া মরদেহ নিয়ে কান্নার রোল উঠেছিল পুরো গ্রামে। মা-বাবা নিজের ছেলের মরদেহ শনাক্ত করলেন, পুলিশ তদন্ত শেষ করে বন্ধুদের জেলে ভরল, এমনকি আসামিরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে খুনের দায়ও স্বীকার করল। কিন্তু সব যখন চূড়ান্ত, তখনই ঘটল সেই অভাবনীয় কাণ্ড। যাকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে বলে মামলা হয়েছিল, সেই ‘নিহত’ সীমিত খাখা নিজেই সশরীরে থানায় এসে হাজির হলেন। তার জীবিত ফেরার খবর শুনে এখন সবার একটাই প্রশ্ন— তবে কি পুলিশ আর বিচারব্যবস্থা মিলে একজন জ্যান্ত মানুষকে কাগজে-কলমে মেরে ফেলেছিল? 

এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের ছত্তিশগড়ে।

ঘটনার শুরু গত অক্টোবর মাসে, যখন একটি অর্ধদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্বজনদের শনাক্তকরণের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ জানায়, এটি নিখোঁজ সীমিত খাখার দেহ। এরপর শুরু হয় গণগ্রেপ্তার। সীমিতের পাঁচ বন্ধুকে খুনের অভিযোগে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু শনিবার রাতে সেই ‘মরদেহ’ যখন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সাথে হেঁটে থানায় ঢুকল, তখন খোদ পুলিশেরই চোখ  আঁতকে উঠা অবস্থা!

সীমিত জানান, তিনি ঝাড়খণ্ডে কাজে গিয়েছিলেন এবং ফোন না থাকায় যোগাযোগ করতে পারেননি। নিজের ‘খুন’ হওয়ার খবর শুনে তিনি হতভম্ব হয়ে যান।

থানায় এসে সীমিত খাখা ক্ষোভের সাথে প্রশ্ন তোলেন, “আমি তো জীবিত, তাহলে আমাকে মৃত ঘোষণা কেন? আমার বন্ধুরা কেন বিনাদোষে জেলে পচছে? আমার ছোট ছোট সন্তানগুলো তিন মাস ধরে বাবার অভাবে ঠিকমতো খেতে পারেনি। ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়াই আপনারা আমাকে মৃত বলে দিলেন কেন?” তার এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। পুলিশ এখন দাবি করছে, পরিবারের শনাক্তকরণ আর আসামিদের স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করেই তারা এগিয়েছিল।

সীমিত জীবিত ফিরে আসায় এখন সেই পোড়া মরদেহটি নিয়ে নতুন রহস্য দানা বেঁধেছে। যদি সীমিত জীবিত থাকে, তবে ওই বনাঞ্চলে কাকে অমানুশিকভাবে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল? সেই লাশের পরিচয় এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশের জন্য। এদিকে নির্দোষ বন্ধুদের জেল থেকে মুক্তি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। একই সাথে মৃতদেহ শনাক্তকরণ থেকে শুরু করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের পুরো নাটকটি খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। 

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ভারত #ছত্তিশগড় #গহীন অরণ্য #খুন #থানা