যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালত ৬৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি অভিবাসী মাসুমা খানের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিচারক একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, যাতে মামলাটি চলাকালীন তাকে দেশে ফেরত পাঠানো না হয়।
আলটাডেনা এলাকার বাসিন্দা মাসুমা খান ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তার নয় বছর বয়সী কিডনি রোগে আক্রান্ত মেয়ের চিকিৎসার জন্য। তবে যুক্তরাষ্ট্রে আসার কিছুদিন পরই এক ‘বন্ধুভাবাপন্ন’ বাঙালি ব্যক্তির হাতে তিনি প্রতারিত হন। ওই ব্যক্তি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি মাসুমাকে গ্রিন কার্ড পাইয়ে দেবেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি মাসুমার নামে ‘নূর জাহান’ পরিচয়ে ভুয়া পরিচয় তৈরি করে আশ্রয়ের (asylum) আবেদন করেন এবং একটি নকল পাসপোর্ট বানান— যা মাসুমা কখনো দেখেননি।
মাসুমার মেয়ে রিয়া খান জানান, “আমার মা তখন খুব অল্প ইংরেজি জানতেন এবং ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না। তিনি খুব সরল, সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করেন।”
প্রতারক ওই ব্যক্তির ঠিকানায় সব সরকারি চিঠিপত্র পাঠানো হতো। আশ্রয়ের আবেদন বাতিল হওয়ার পর তিনি মাসুমাকে আত্মগোপনে থাকতে বলেন। বহু বছর পর, স্বামীর মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করতে গিয়ে মাসুমা জানতে পারেন তার নামে বহিষ্কারের (ডিপোর্টেশন) আদেশ রয়েছে।
এরপর থেকে তিনি একাধিক আইনজীবীর সহায়তায় নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ২০২০ সাল থেকে মার্কিন ইমিগ্রেশন বিভাগ তাকে নিয়মিত বার্ষিক চেক-ইনে হাজিরা দিতে বলে। গত মাসে সে ধরনের এক চেক-ইনে গেলে তাকে আটক করা হয়।
ফ্রেসনো আদালত থেকে ক্যালিফোর্নিয়া সিটিতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে রিয়া খান বলেন, “আমি খুশি, উত্তেজিত। শুনানির সময় চোখে পানি চলে এসেছিল।”
অভিবাসন অধিকারকর্মীরা বলছেন, ইংরেজিতে দুর্বলতা ও নিজেদের সম্প্রদায়ের প্রতি অতিরিক্ত বিশ্বাসের কারণে অনেক দক্ষিণ এশীয় অভিবাসী এমন প্রতারণার শিকার হন।
এসি//