যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম শাটডাউন বা সরকারি অচলাবস্থার জেরে বিমান চলাচলে ব্যাপক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তা ঝুঁকি ও কর্মী সংকটের কারণে দেশটির অন্তত ৪০টি প্রধান বিমানবন্দরে শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৬টা (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা) থেকে ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)-এর নির্দেশে এই ফ্লাইট বাতিল কার্যকর হয়। যদিও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো আপাতত এই নির্দেশনার বাইরে রাখা হয়েছে।
রয়টার্সের তথ্যমতে, সরকারি অচলাবস্থার কারণে গৃহীত এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের প্রায় ৪ শতাংশ বাতিল করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়—যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকান এয়ারলাইনস, ডেলটা, সাউথওয়েস্ট এবং ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট। অচলাবস্থা চলতে থাকলে বাতিলের হার আগামী মঙ্গলবার ৬ শতাংশে এবং ১৪ নভেম্বর নাগাদ ১০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এফএএ।
আমেরিকান এয়ারলাইনস জানিয়েছে, শুক্রবারের ২২০টি ফ্লাইট বাতিলের ফলে প্রায় ১২ হাজার যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অধিকাংশ যাত্রীকে বিকল্প ফ্লাইটে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়েছে।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী রবার্ট আইসম বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি যাত্রীদের বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি করবে না, কিন্তু পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে তা গুরুতর সমস্যায় রূপ নেবে।”
ইউনাইটেড এয়ারলাইনস জানায়, শুক্রবার তাদের ১৮৪টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। শনিবার আরও ১৬৮টি ও রবিবার ১৫৮টি ফ্লাইট বাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রভাবিত যাত্রীদের প্রায় অর্ধেককে চার ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় বুকিং দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক ধাক্কা সামলানো গেলেও, নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত যদি অচলাবস্থা চলতে থাকে, তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আকাশপথে বড় সংকট তৈরি করবে। বর্তমানে দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালিত হয়। সরকারি শাটডাউন ও বেতনবিহীন কর্মীদের অনুপস্থিতিতে এফএএর সক্ষমতা ক্রমশ কমে আসছে—যা যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
এমএ//
