জাতীয়

জাকির নায়েক ইস্যুতে দিল্লির আহ্বানে ঢাকার প্রতিক্রিয়া

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে ডা. জাকির নায়েক ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের উদ্দেশে বলেছেন, বিতর্কিত ইসলামিক বক্তা ডা. জাকির নায়েক যদি ঢাকা সফরে আসেন, তাহলে যেন বাংলাদেশ সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতের হাতে তুলে দেয়।

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম গণমাধ্যমে বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একজন বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরাও বিশ্বাস করি, কোনো দেশ অন্য দেশের অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেয়া উচিত নয়।”

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “জাকির নায়েক ভারতের পলাতক আসামি। তাই আমরা আশা করি, তিনি যদি বাংলাদেশ সফরে যান, ঢাকাও তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।”

তিনি আরও বলেন, “ভারতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে। তাই সে যেখানেই যাক না কেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উচিত আমাদের উদ্বেগকে গুরুত্ব দেয়া।”

সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর আসে যে, ইসলামিক বক্তা ডা. জাকির নায়েক আগামী ২৮ নভেম্বর দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসতে পারেন। তিনি ঢাকায় একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বলে জানা যায়।

 

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কর্ণধার রাজ গণমাধ্যমে বলেন, “সবকিছু ঠিক থাকলে ২৮ নভেম্বর ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় আসবেন। আগারগাঁওয়ে তার প্রথম বক্তৃতা অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা আছে। শুধু ঢাকাতেই নয়, ঢাকার বাইরেও তার কয়েকটি প্রোগ্রাম করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

তবে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আগেই জানিয়েছিলেন, জাকির নায়েকের সফর সম্পর্কে মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য জানে না। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণে তিনি বাংলাদেশে আসছেন—এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই,”

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনে। ওই বছর ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার পর ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়।

এরপর তিনি মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিও পান। মালয়েশিয়া সরকার যদিও এখনো তাকে প্রত্যর্পণ করেনি, তবুও ভারত সরকার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার প্রত্যর্পণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জাকির নায়েকের সফর নিশ্চিত করেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

 

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ভারত #পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় #বাংলাদেশ সরকার #রণধীর জয়সওয়াল #জাকের নায়েক #ডা. জাকের নায়েক