ছয় দফা দাবিতে আগামী রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী ব্যাংক থেকে ওএসডি হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল, ওএসডি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, শর্ত আরোপ করে অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট নেওয়া বন্ধ এবং পানিশমেন্ট ট্রান্সফার বন্ধসহ ছয় দাবি জানান তারা।
ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এমদাদ হোসাইন বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে প্রহসনমূলক পরীক্ষার আয়োজন করে ৪০০ জনকে ছাঁটাই এবং পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ওএসডি করেছে।
তিনি বলেন, সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঘরে চরম মানবিক বিপর্যয় চলছে। এর মধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্মীদের অফিস আইডি এবং ব্যক্তিগত স্যালারি আইডি বন্ধ করে দিয়েছে। এ মুহূর্তে বাসা ভাড়া দেওয়া, বাবা-মায়ের ওষুধ কেনা বা বাজার করার মতো টাকা তাদের হাতে নেই।
ব্যাংক কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, চাকরির আট বছর পর এসে মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজনের নামে প্রহসনের পরীক্ষা বয়কট করার কারণে তাদের ওএসডি ও চাকরিচ্যুত করা হয়। ব্যাংকের পরীক্ষার মতো ওএসডি এবং চাকরিচ্যুতের নোটিশও অবৈধ। কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ বা চাকরিচ্যুতের কারণ উল্লেখ করেনি।
ব্যাংক কর্মচারী মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা ব্যাংকের সাধারণ কর্মী। ব্যাংকে আমাদের কোনো অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি না থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে এই জবাব আমরা পাইনি। আমরা আজ খাবার কেনার টাকা জোগাড় পর্যন্ত করতে পারছি না’।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বিপুলসংখ্যক কর্মী সরাসরি সিভি দিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। তাদের বেশিরভাগই ছিলেন চট্টগ্রামের পটিয়া ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার বাসিন্দা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রদবদল আসে ওই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে। ২০১৭ সালের পরে ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২৭ সেপ্টেম্বর বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করে। ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তার অংশগ্রহণের কথা থাকলেও মাত্র ৪১৪ জন পরীক্ষা দেন। যারা আসেননি, সেই ৪,৯৭১ জনকে পরদিন থেকেই ওএসডি করা হয়। আর পরীক্ষার বিরোধিতা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দুই দফায় চাকরিচ্যুত করা হয় ৪০০ কর্মীকে।
আই/এ