পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটায় প্রতিদিন দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক সমুদ্র ও প্রকৃতির টানে ভিড় জমালেও জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন পশ্চিম দিকে হোটেল সি-ভিউয়ের কারণে এখন অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অভিযোগ, হোটেলটি গভীর রাতে টয়লেটের বর্জ্য ও ময়লা পানি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি সমুদ্রে ফেলে। এতে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ, ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা ও সমুদ্রস্নানে নামা পর্যটকরা।
সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিদিন রাত আড়াইটার থেকে তিনটার মধ্যে হোটেলের পেছন দিক দিয়ে পাইপের মাধ্যমে এসব বর্জ্য সমুদ্রে ফেলা হয়। ময়লাগুলো টেউয়ের ধাক্কায় আবার বিচে উঠে আসে।সকালে সৈকত এলাকায় বাজে দুর্গন্ধে বিচে কোন পর্যটক নামতেই পারেনা। আশেপাশের হোটেল ও বাসাবাড়িতে থাকাও কস্টসাধ্য হয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোটেলের সাবেক এক কর্মচারী জানান, প্রতিনিয়ত এভাবেই বর্জ্য ফেলা হয় এবং তিনি যখন ওই হোটেলে চাকরি করেছেন তখন স্থানীয়দের সাথে তাকে বহুবার ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন গভীর রাতে সমুদ্রে হোটেলের বাথরুমের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ভোরে সৈকতে গেলে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়।পর্যটকরাও সাগরে গোসল করতে নামতে পারেনা। এর কারনে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে,পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
একই অভিযোগ করে পর্যটক সনিয়া আক্তার বলেন, ‘এত দূর থেকে কুয়াকাটা এসেছি, কিন্তু সৈকতে গিয়ে দুর্গন্ধে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এভাবে ময়লা ফেলা হলে পর্যটকদের আসার আগ্রহ কমে যাবে। দুর্গন্ধের কারণে বিচে নামাতো দুরের কথা, এখানকার আশপাশের হোটেল গুলোতও থাকা যায়না’।
কুয়াকাটা উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের (উপরা) সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মিরাজ বলেন, এটি পরিবেশ আইনবিরোধী কাজ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক ব্যবস্থা না করলে সামুদ্রিক প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। অন্যদিকে পর্যটকদের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া অতি জরুরী।
হোটেল সি ভিউয়ের ম্যানেজার মো, সোলায়মান বলেন, ‘টয়লেটের বর্জ্য নয়, আমরা প্রতিদিন রাত আড়াইটার থেকে তিনটার দিকে গোসলের পানি বিচের বালুতে ফেলি’।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক মো, ইয়াসিন সাদেক বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট হোটেলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আই/এ