আইন-বিচার

জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার শুরু

বায়ান্ন প্রতিবেদন

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

বুধবার (০৬ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন—অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এর আগে, মামলার সব পক্ষের শুনানি শেষ হয় ২৯ জুলাই। ৩০ জুলাই অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য দিন ধার্য ছিল, এবং আজই বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হলো।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন চিফ প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, মিজানুল ইসলাম, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।

পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত চারজন আইনজীবী শুনানি করেন। এর মধ্যে পাঁচ আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাত মিয়া, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে মামুনুর রশীদ, এবং অন্য আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম।

বিচারাধীন আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর মো. শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ। বর্তমানে তাঁরা ট্রাইব্যুনালের কারাগারে রয়েছেন। তাদের পক্ষে অব্যাহতির আবেদন জানান আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো, আজিজুর রহমান দুলু এবং সালাহউদ্দিন রিগ্যান।

২০২৪ সালের ২৪ জুন মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করে তদন্ত সংস্থা, যেখানে সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসহ মোট ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

২৮ জুলাই প্রসিকিউশন পক্ষ বিচার শুরুর আবেদন জানায়। চিফ প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যসহ চারজনের নির্দেশে ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়। তাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হওয়াই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ।

এদিকে, একই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের তৃতীয় দিন চলছে।

চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিচ্ছেন আবু সাঈদ হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী রিনা মুর্মু।

এছাড়া, আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আদালতে হাজির করা হয়। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #আবু সাঈদ #জুলাই গণঅভ্যুত্থান #আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল