আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের বক্তব্যে উত্তপ্ত তেহরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরান স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার কোনো অনুরোধ করেনি—যেমনটি দাবি করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঈসমাইল বাঘায়ি বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো বৈঠকের অনুরোধ জানানো হয়নি।”

এর ঠিক এক দিন আগে, হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নৈশভোজে বসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ‘গত মাসে ইরান ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের কাছে পরাজিত হওয়ার পর তারা এখন একটি নতুন পরমাণু চুক্তির বিষয়ে আলোচনায় বসতে চাচ্ছে।’

এমনকি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, এই বৈঠক আগামী সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। তিনিও ওই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন।  

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গতকাল ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে লিখেছেন, ‘তেহরান কূটনীতিতে আগ্রহী। তবে আরও আলোচনার বিষয়ে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আমাদের আছে।’

অবশ্য ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্পের ওপর দাবি প্রত্যাখ্যান করার দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা গেলে আলোচনা আবার শুরুর বিষয়ে ইরানের কোনো সমস্যা নেই।

গত সোমবার সম্প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকার ইরানে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। সমালোচকেরা পেজেশকিয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে ইরানের ওপর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরও তিনি ‘অতিমাত্রায় নমনীয়’ অবস্থান নিয়েছেন।

ইরানের রক্ষণশীল কায়হান পত্রিকা এক সম্পাদকীয়তে পেজেশকিয়ানকে উদ্দেশ করে লিখেছে, ‘আপনি কি ভুলে গেছেন, এই মার্কিনিরা জায়নবাদীদের সঙ্গে মিলে এর আগেও আলোচনার কথা বলে হামলার সময় ও প্রস্তুতি নিয়েছিল?’

সংরক্ষণশীল আরেকটি পত্রিকা জাভান প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সমালোচনা করে লিখেছে, তার বক্তব্য ছিল ‘একটু বেশি নমনীয়’।

তবে সংস্কারপন্থী দৈনিক হাম মিহান প্রেসিডেন্টের ইতিবাচক মনোভাবের প্রশংসা করেছে।

এদিকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক যৌথ হামলায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইরানের দাবি, এসব হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

এই প্রেক্ষাপটে পরমাণু আলোচনা নিয়ে তেহরানে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ও বিভ্রান্তি। সরকারপক্ষ ও বিরোধীরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিচ্ছে—আলোচনায় বসা উচিত কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র মতবিরোধ।

 

এসি//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #ইরান #ডোনাল্ড ট্রাম্প