আন্তর্জাতিক

সরে যাচ্ছে ইরানের রাজধানী

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, রাজধানী তেহরানকে দক্ষিণের দিকে, বিশেষ করে পারস্য উপসাগরের উপকূলে স্থানান্তর করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ, ভয়াবহ পানি সংকট এবং ভূমিধসের ঝুঁকির কারণে এই পদক্ষেপ জরুরি।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান গত বৃহস্পতিবার জানান, তিনি গত বছরই ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে রাজধানী সরানোর এই প্রস্তাব পেশ করেছিলেন। যদিও তিনি স্বীকার করেন যে তার এই প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে, তবুও প্রেসিডেন্টের যুক্তি বর্তমান সংকট এতটাই গভীর যে ইরানের রাজধানী স্থানান্তর এখন বাধ্যতামূলক।

পেজেশকিয়ান জানান, তেহরান, কারাজ এবং কাজভিন এলাকায় এখন ভয়াবহ পানি সংকট চলছে, যা সহজে সমাধান করা সম্ভব নয়। তেহরান শহরে এক কোটিরও বেশি মানুষ বাস করে এবং তারা ইরানের মোট পানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ ব্যবহার করে।

তিনি আরও বলেন, গত বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৪০ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিক পরিমাণ ২৬০ মিলিমিটারের প্রায় অর্ধেক। এ বছরও পরিস্থিতি একই রকম। বাঁধে পানি কমে যাওয়া এবং অসংখ্য কূপ শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে।

প্রেসিডেন্টের ভাষ্যমতে, ভূগর্ভস্থ পানি দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ায় দেশের কিছু জায়গায় প্রতি বছর জমি ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত নিচে বসে যাচ্ছে, যা একটি ভয়াবহ সংকেত।

প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হরমোজগান প্রদেশে সফরে গিয়ে নতুন রাজধানীর সম্ভাব্য ইঙ্গিতও দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের সমস্যা মোকাবিলার জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র পারস্য উপসাগর এলাকার দিকে সরাতে হবে।

তিনি বলেন, পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত হরমোজগান প্রদেশ থেকে সহজেই খোলা সমুদ্রে যাওয়া যায়, যা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর ভালো সুযোগ দেবে। যদি আমরা এই জায়গার সম্ভাবনাকে নতুনভাবে কাজে লাগাই, তাহলে এটি একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত এলাকা হয়ে উঠতে পারে। ভবিষ্যতের জন্য সঠিক ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা দরকার।

উল্লেখ্য, এর আগেও কয়েকজন প্রেসিডেন্ট রাজধানী সরানোর কথা বলেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও একবার এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন।

 

এসি//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন