দেশজুড়ে

প্রতিবেশীর টয়লেট থেকে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার : গ্রেপ্তার ৪

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে প্রতিবেশীর বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকি থেকে নিখোঁজ আট বছরের শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত যুবক ও তার নানার বাড়িতে আগুন দেয়। নিহত শিশু মুরসালিন মিয়া (০৮) ওই এলাকার মশিউর রহমান মুছা ও মনজু দম্পতির ছোট ছেলে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পরিবারের দাবী শিশুটিকে বলাৎকার পর হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে প্রতিবেশী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মমিনুল ইসলাম (২৩)। মমিনুল ইসলাম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।

মরদেহ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্ত মমিনুল ও তার নানার বাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পরে নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত মমিনুল ইসলামের মা মহসেনা বেগম ও বোন ফাহিমা খাতুন এবং মমিনুলের পরিবারকে প্রশ্রয় দিয়ে পালানোয় সহযোগীতা করার অভিযোগে প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে আটক করে থানায় আনে পুলিশ। পরে নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে ৯জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। আটক ৪ জনকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত শিশু মুরসালিনের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরসালিনের বাড়িতে তার বড় ভাই মিমের বিয়ের আলোচনা চলছিলো। এ সময় মমিনুল ইসলাম মুরসালিনকে একাধিকবার ডেকে পাঠায়। পরে সে এক সময় নিজে ডেকে নিয়ে তার ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে মোবাইলে ভিডিও প্রলোভনে বলাৎকার করে মেরে ফেলে।

তারা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মুরসালিনের মা ছেলেকে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। খোঁখুঁজির এক পর্যায়ে মমিনুলের বাড়িতে গিয়ে মুরসালিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে মমিনুল ও তার মা মহসেনা বেগম মুরসালিনকে দেখেনি বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর আবারও গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা দরজায় তালা লাগিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করে মমিনুলের নানা মহর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। এক সময় বিষয়টি চাউর হলে মমিনুলের মা মনজু বেগম ও নানী মেহরা বেগম প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম ও আজির রহমানের বাড়িতে আত্মগোপন করেন।

এরই মধ্যে মুরসালিনকে না পেয়ে শুক্রবার তার পরিবার এলাকায় মাইকিং করেন । পরদিন শনিবার খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে মমিনুলের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে শিশুর মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিস এর টিম লিডার মোফাজ্জল হোসেন জানান, দুটি বাড়ির ৩টি শয়নক্ষসহ ৫টি ঘরে আগুন লাগে। আমরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে আমরা পৌছার আগেই  এসব ঘরের ভিতরে থাকা আসবাবপত্র পুড়ে যায়

ওসি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ বিষয়ে নিহত শিশুর বাবা মশিউর রহমান বাদী হয়ে  ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আটক ৪জনকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন