শরীর, মন আর ত্বকের যত্নে দুধ-খেজুরের জাদু
দিনের শেষে এক গ্লাস হালকা গরম দুধ, তার সঙ্গে মিশিয়ে নেয়া হয় মাত্র দুটি খেজুর। এই ছোট্ট অভ্যাসটি আপনার শরীর ও মনকে এনে দিতে পারে অসাধারণ উপকার। প্রাচীনকাল থেকেই খেজুর ও দুধ একসঙ্গে খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে নানা আলোচনা হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানও বলছে, এই দুই প্রাকৃতিক উপাদানের সম্মিলিত গুণাগুণ শরীরের বিভিন্ন জটিলতা দূর করতে সহায়ক। চলুন জেনে নিই, প্রতিদিন রাতে দুধ ও খেজুর একসঙ্গে খেলে কি কি লাভ হতে পারে :
১. ঘুম হয় গভীর ও মানসিক চাপ কমে
দুধে থাকা ট্রিপ্টোফ্যান নামের অ্যামিনো অ্যাসিড স্নায়ুকে শান্ত করে, মস্তিষ্কে সেরোটোনিন তৈরি করে এবং ঘুম ভালো করতে সাহায্য করে। খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ও মিনারেল মন ভালো রাখতে সহায়তা করে। ফলে দুধ ও খেজুর একত্রে খেলে ঘুমের মান বাড়ে এবং মানসিক চাপও কমে।
২. হৃদরোগ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম ও সামান্য সোডিয়াম যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া এটি খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেজুর-দুধ খেলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে।
৩. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে দারুণ কার্যকর
দুধ ও খেজুর দু’টিতেই আছে পর্যাপ্ত আয়রন। বিশেষ করে যাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি রয়েছে, তারা প্রতিদিন দুধের সঙ্গে খেজুর খেলে অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারেন।
৪. হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক ফাইবার হজমের প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি অন্ত্র পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও পেট সংক্রান্ত জটিলতা কমায়।
৫. শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়
সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে বা শরীরে দুর্বল লাগলে কয়েকটি খেজুর এবং দুধ মিলিয়ে খেলে তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি ফিরে আসে। এটি প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার হিসেবেও কাজ করে।
৬. যৌনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
খেজুর বহু আগে থেকেই প্রাকৃতিক যৌনউত্তেজক হিসেবে পরিচিত। এটি শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ও যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। পুরুষদের জন্য বিশেষভাবে রাতের এই অভ্যাস উপকারী।
৭. ত্বক রাখে তরুণ ও উজ্জ্বল
খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-এজিং উপাদান ত্বককে বার্ধক্যের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যই এটি দারুণ একটি প্রাকৃতিক বিউটি রেসিপি।
খাবেন যেভাবে -
১. রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধে ২টি খেজুর ভিজিয়ে রেখে খান।
২. চাইলে খেজুর আগে থেকে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খাওয়াও যেতে পারে।
৩. তবে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য বড় কোনও পরিবর্তনের দরকার নেই। কখনো কখনো ছোট অভ্যাসই বড় প্রভাব ফেলে। দুধ ও খেজুর এই দুই উপাদানই সহজলভ্য, পুষ্টিকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। তাই আজ রাত থেকেই শুরু হোক স্বাস্থ্যকর এই অভ্যাস।
এসকে//