আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের হামলায় গত ১৫ বছরে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের বিস্তারিত তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেইসঙ্গে এসব ঘটনায় পৃথকভাবে তদন্ত চালানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শহীদ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ভাই আবরার ফাইয়াজ এবং মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন। তারা ২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের প্রাক্কালে সংগঠিত রাজনৈতিক সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের নাম-তালিকা তৈরি করে বিচার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সাক্ষাতে আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থে কথা বলায় আমার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। সে অসম পানিবণ্টনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিল।’ তিনি আরও জানান, এখনও আবরারের মা ছেলের শোকে কাঁদেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ করেন যেন এমন মর্মান্তিক ঘটনা আর কোনো পরিবারকে স্পর্শ না করে।
এ সময় কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি তুলে ধরেন বরকত উল্লাহ। তাঁর ভাষায়, ‘সেতুর অভাবে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী দাবি জানালেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।’
ছাত্রবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার দাবিও উঠে আসে আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজের কণ্ঠে। বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও শিক্ষার্থীদের উপযোগী হয়ে ওঠেনি। ল্যাব, সরঞ্জামসহ নানা মৌলিক সুবিধার ঘাটতি আছে।’
র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফাইয়াজ বলেন, ‘আবরার হত্যাই প্রথম না, আগেও এমন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। সব ঘটনার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘আবরারের নির্মম হত্যাকাণ্ডে গোটা জাতি মর্মাহত হয়েছিল। তার বিচার নিশ্চিত হবে—এই প্রতিশ্রুতি আমরা দিচ্ছি। পাশাপাশি ২৪ জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনের আগে রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। সরকার ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়াটি শুরু করেছে।’
এমএ//