নেতানিয়াহুর সমালোচনায় ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
গাজায় চলমান যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সরব ভূমিকা নেওয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সেসকা আলবানিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (০৯ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আলবানিজ 'যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালাচ্ছেন'।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ফ্রান্সেসকা আলবানিজ গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে কিছু প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়, যারা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং গাজায় সহিংসতা চালাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে।
আলবানিজ এই নিষেধাজ্ঞাকে গুরুত্ব না দিয়ে জানান, তিনি তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মাফিয়া-স্টাইলে ভীতি প্রদর্শনের জবাবে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি ব্যস্ত আছি—জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে গণহত্যা থামাতে এবং অপরাধীদের শাস্তি দিতে তাদের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিতে।”
তিনি আরও বলেন, ইউরোপের কিছু দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দিচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে আলবানিজ লিখেছেন, “ইতালি, ফ্রান্স ও গ্রিসের নাগরিকদের জানা উচিত—আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নেওয়া প্রতিটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তাদেরকেই দুর্বল ও ঝুঁকির মুখে ফেলছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আলবানিজের এই আইসিসি-ভিত্তিক কার্যকলাপই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আইনি ভিত্তি তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে ইসরায়েল ইস্যুতে সমালোচনার জবাবে মার্কিন হুমকি ও চাপ নতুন নয়। এর আগেও ট্রাম্প প্রশাসন আইসিসির বিচারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত মাসে আইসিসির চার বিচারককে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হয়। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন ফ্রান্সেসকা আলবানিজ।
দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আলবানিজ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ করায় বহু বছর ধরেই ইসরায়েল ও তার মিত্র রাষ্ট্রগুলো তাকে অপছন্দ করে আসছে এবং জাতিসংঘ থেকে তাকে অপসারণের দাবিও তুলেছে।
এসি//