বন্ধু এন্ড্রু কিশোরের প্রয়াণ দিবসে হানিফ সংকেতের আবেগঘন পোস্ট
‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’—এমন অসংখ্য হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গানের শিল্পী তিনি, যিনি কণ্ঠে বেঁধেছিলেন বাঙালির শত শত অনুভব। তিনি এন্ড্রু কিশোর—বাংলা গানের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। জীবদ্দশায় কণ্ঠ দিয়েছেন ১৫ হাজারেরও বেশি গানে, যার অনেকগুলোই আজও শ্রোতাদের মনে গেঁথে আছে কালজয়ী স্মৃতির মতো।
২০২০ সালের ৬ জুলাই, নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক এক কঠিন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই মহান শিল্পী। দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও মৃত্যুকে ঠেকানো যায়নি।
চিকিৎসকদের আশাহত বার্তার পর ক্যান্সারবিধ্বস্ত শরীরে তিনি দেশে ফিরেছিলেন ১১ জুন, নিজের ঘরে নয়, ঠাঁই নিয়েছিলেন রাজশাহীতে বোনের বাড়িতে। কারণ, চিকিৎসার খরচ জোগাতে আগেই বিক্রি করতে হয়েছিল নিজস্ব বাসাটি।
জনপ্রিয় টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে বহুবার দর্শকদের সামনে এসেছেন এন্ড্রু কিশোর। অনুষ্ঠানটির নির্মাতা হানিফ সংকেত ছিলেন তার অন্তরঙ্গ বন্ধু। সেই বন্ধুত্ব ছিল দীর্ঘ ৪০ বছরের।
আজ কিংবদন্তির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মৃতির দরজায় যেন আবারও কড়া নাড়ল এন্ড্রু কিশোরের গান আর ভালোবাসা। আর সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লেন হানিফ সংকেত। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এন্ড্রু কিশোরকে নিয়ে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি, যেখানে ফুটে উঠেছে বন্ধু হারানোর কষ্ট আর গভীর ভালোবাসা।
হানিফ সংকেত তার ফেসবুকে লিখেন, আজ বন্ধু এন্ড্রু কিশোরের পঞ্চম প্রয়াণ দিবস। যার কাছে গানই ছিলো জীবন-মরণ, গানই ছিলো প্রাণ। এই গানের জন্যই মানুষ তাঁকে ভালোবাসতো, দিয়েছিল ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ উপাধি। কিশোর যেমন প্রাণ খুলে দরাজ গলায় গাইতে পারতো, তেমনি সবার সঙ্গে প্রাণ খুলে মিশতে পারতো। কিশোরের সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। এক সঙ্গে অনেক আড্ডা দিয়েছি, বহুবার বিদেশে গেছি, এক সঙ্গে থেকেছি। কিশোর ছিল ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত শিল্পী।
তিনি আরও লিখেন, একজন আদর্শ শিল্পী, একজন মানবিক মানুষ ছিলো কিশোর। গানের মাধ্যমেই এন্ড্রু কিশোর বেঁচে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বন্ধু ভুলিনি তোমায়-ভুলব না-ভুলতে পারবো না। ভালো থেকো, শান্তিতে থেকো।

এসি//