বিএনপি

দ্রুতই নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায় চীন : মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে দেশটি সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন)   বিএনপির প্রতিনিধি দলের চীন সফর নিয়ে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন,  চার দিনব্যাপী সফরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং চীন সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়েছেন তারা। যাদের মধ্যে ছিলেনচীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংসং, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার মিসেস সান হাইয়ান।

তিনি বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চীনের বিস্ময়কর উন্নতি ও আন্তর্জাতিক প্রবৃদ্ধি এবং তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভের ইতিবাচকতার কথা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই বৈঠকে পলিসি ব্যুরোর সদস্য শি-লি-হংসং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং দ্রুতই একটি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত ১৭ বছরের অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সহনীয় করতে আমরা ঋণ পরিশোধ সময়সীমা বৃদ্ধি, বিভিন্ন ফি পুনর্বিবেচনা এবং অনুদানের সম্ভাব্যতার বিষয়েও তাদের সহায়তা চেয়েছি। যেটা তারা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে চীনের অবদান আমাদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতায় আগামীতে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মেডিক্যাল ও স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা, যোগাযোগ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, এসএমই বিজনেস, ব্লু ইকোনমি উন্নততর প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে চীনের অধিকতর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়। চীনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ চীন ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নির্মাণ, দেশের উত্তরাঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও রফতানি সুযোগ বৃদ্ধির বাস্তব পদক্ষেপ কুনমিংয়ে চারটি বিশেষায়িত হাসপাতালে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা সহজতর করা, চীন-বাংলাদেশের মাঝে স্থলপথে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ, এগুলোও আমাদের আলোচ্যসূচিতে ছিল, যা ইতিবাচকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। চীন কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে দুই বছর মেয়াদি রাজনৈতিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আমরা ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছি।

এছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে চীনের অধিকতর এবং কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চীন সফর করা বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেনবিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।

 

আই/এ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন