দেশজুড়ে

আবারও গান গাইবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরিবার আবারও গান গাইতে পারবে। দীর্ঘদিন ধরে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করা এই পরিবারের সদস্যরা গত বুধবার জেলা শহরের মুক্তমঞ্চে গান গাইতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। এমনকি বাউল শিল্পী আবুল সরকারের গ্রেপ্তারের কথাবলে তাদেরও ভয় দেখানো হয়। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের হস্তক্ষেপে তাদের আবারও গান গাওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) সকালে পরিবারটি আবারএ মুক্তমঞ্চে আসেন। সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূইঁয়া গান গাওয়ার বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

প্রায় ৫০ বছর ধরে মুক্তমঞ্চে গান করে সংসার চালান পরিবারের কর্তা হেলাল মিয়া। সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামের বাসিন্দা এই পরিবারের মোট সদস্য ১৩ জন, যার মধ্যে ৯ জনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যদের মধ্যে হেলাল মিয়া, তার চার ছেলে ও এক মেয়ে কারও চোখে আলো নেই। তবুও তারা কখনো হাত পাতেন নামুক্তমঞ্চে গান গেয়েই চলে তাদের বড় সংসার।

মুক্তমঞ্চে গান গেয়ে তারা প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা, কখনো পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করেন। বয়স ৬৫ পেরোনো হেলাল মিয়া ছোটবেলায় বাউল শিল্পী শাহনূর শাহের কাছে সঙ্গীতের তালিম নেন। এরপর সন্তানদেরও গান শেখান। ছোট বয়স থেকেই হাট-বাজারে গান করেই জীবন চলে তাদের।

হেলাল মিয়া জানান, “ভয় আর আতঙ্কে গান বন্ধ ছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও বিএনপির নেতারা আমাকে আবার গান গাওয়ার জন্য বলেছেন। মঙ্গলবার পুরো দল নিয়ে মুক্তমঞ্চে গিয়েছিলাম, তবে দর্শক পাইনি।

সাংস্কৃতিক সংগঠক শাহ মোহাম্মদ শরিফ জানান, কবি ফরহাদ মজহার পরিবারটির খোঁজ নিয়েছেন এবং তাদের গান চালু রাখতে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন।

সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূইঁয়া বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তাদের আবার গান গাওয়ার ব্যবস্থা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

হেলাল মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে গান গাইলেও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি কখনো। এখন কোথায় গান গাইবেন সেই জায়গাটিও ঠিকমতো পাচ্ছেন না। গান গেয়ে আয় না করতে পারলে তাদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

প্রতিবন্ধী পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন দার্শনিক ও কবি ফরহাদ মজহার। তিনি খাদ্যসামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করেছেন।

আই/এ

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #প্রতিবন্ধী #ব্রাহ্মণবাড়িয়া