জাতীয়

শ্বশুর বাড়ি এবং নিজ জেলায় পদায়ন পাবেন না কর্মকর্তারা

বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

বিগত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের দায়িত্ব দেয়া হবে না।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের জন্য ভেতর-বাহির থেকে বড় শক্তি কাজ করতে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “ছোটোখাটো নয়, বড় শক্তি নিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে। হঠাৎ করেই আক্রমণ হতে পারে। এই নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু যত ঝড়ঝঞ্চাই আসুক, সেটি অতিক্রম করতে হবে।”

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ক প্রথম সমন্বয় সভা হয়।

প্রেস সচিব বলেন, এই আক্রমণ বলতে শুধু শারীরিক আক্রমণ নয়। সাইবার অ্যাটাক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিজ-ইনফরমেশন (অপতথ্য) ছড়ানোকেও বোঝানো হচ্ছে। যারা পতিত স্বৈরাচার এবং তার দোসর, তারা দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, তা চাইবে না। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আজকের বৈঠকে মূলত চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাঠ প্রশাসনের পদায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য মোকাবিলা।

বিগত তিনটি নির্বাচনে যেসব জেলা প্রশাসক (ডিসি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, (ইউএনও) সহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করেছেন এবার তাঁদেরকে নির্বাচনি দায়িত্ব দেয়া হবে না। পদায়নের সময় কর্মকর্তার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, শারীরিক সক্ষমতা, কর্মদক্ষতা এবং গণমাধ্যমে অনিয়মের অভিযোগ আছে কি না যাচাই বাছাই করা হবে।

সবচেয়ে ফিট কর্মকর্তাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পদায়ন করা হবে। তবে নিজ জেলা বা শ্বশুরবাড়ির এলাকায় কাউকে পদায়ন করা হবে না। তাঁদের কোনো আত্মীয়স্বজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কি না, পদায়নের ক্ষেত্রে সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হবে। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে ৯০ হাজার সেনাসদস্য মাঠে থাকবেন। এছাড়া ২ হাজার নৌ-বাহিনী সদস্য মাঠে থাকবেন। প্রতিটি জেলায় এক কোম্পানি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। নির্বাচনের আগে ও পরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণ আরও কার্যকর করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বডি ওর্ন ক্যামেরা নিয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রশিক্ষণসংক্রান্ত ভিডিও ও উপকরণগুলো যেন ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট, টিভি বা বিটিভিতে আসে, সে বিষয়ে দ্রুত কাজ করার জন্য বলা হয়েছে। 

পাশাপাশি, নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ও অপতথ্য মোকাবিলায় দুটি কমিটি গঠনের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম। 

তিনি জানান, দুটি কমিটিই উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কাজ করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ছড়িয়ে পড়া অপতথ্য বা ভুয়া তথ্যের ফ্যাক্ট যাচাই করে তা প্রকাশ করবে। এর জন্য কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা হবে বলে জানান তিনি।

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #জাতীয় নির্বাচন #জাতীয় সংসদ নির্বাচন #প্রধান উপদেষ্টা #ড. মুহাম্মদ ইউনূস