শ্রম আইন ও শ্রমিক অধিকার নিয়ে চলমান সংস্কার প্রচেষ্টাকে ঘিরে কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে এক উচ্চপর্যায়ের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় নেতারা শ্রম সংস্কার এবং পোশাক শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আয়োজনে এই নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বৃহৎ পরিসরে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে শ্রম সংস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আইএলও মহাপরিচালকসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা বলেন, শ্রম সংস্কার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ ও আন্তর্জাতিক অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।
রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যেও পোশাক শিল্পের গুরুত্ব স্পষ্টভাবে উঠে আসে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একে দেশের অর্থনীতির ভিত্তিপ্রস্তর আখ্যা দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতের যে কোনো সরকারকে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম সংস্কার উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেন।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, জামায়াতের অনেক নেতাকর্মীর পোশাক শিল্পে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা এই খাতকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করতে সহায়ক হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচিত হলে তা এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির বর্তমান উদ্যোগগুলোকে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে বলেন, এগুলো শুধু অব্যাহত নয়, ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হওয়া উচিত।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা তার রাজনৈতিক যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা হিসেবে রানা প্লাজা দুর্ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন। মেডিকেল ছাত্রী হিসেবে আহতদের সেবা দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাকে অনিরাপদ শ্রম পরিবেশের মানবিক মূল্য বুঝতে সহায়তা করেছিল বলে জানান তিনি।
সবশেষে ড. ইউনূস আবারও জোর দিয়ে বলেন, শ্রম খাতে অর্থবহ ও স্থায়ী সংস্কার বাস্তবায়নে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।