গাজার ওপর ইসরাইলের হামলা ও তা নিয়ে বিতর্কিত অবস্থানের কারণে নিজের ম্যানেজারকে বরখাস্ত করেছেন বিশ্বখ্যাত পপ তারকা দুয়া লিপা। ব্রিটিশ-আলবেনীয় এই গায়িকা বর্তমানে সংগীত জগতের শীর্ষ তারকাদের একজন হলেও, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও তিনি সমানভাবে আলোচনায় রয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল–এর খবরে জানানো হয়, দুয়া লিপার ম্যানেজার ডেভিড লেভি ফিলিস্তিনপন্থি আইরিশ ব্যান্ড নিক্যাপ-কে গ্ল্যাস্টনবারি ফেস্টিভাল থেকে বাদ দেওয়ার আহ্বান জানানো এক চিঠিতে সই করেছিলেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই সংগীত অঙ্গনে তীব্র সমালোচনা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত নিক্যাপ কোনো বাধা ছাড়াই মঞ্চে পরিবেশনা করে।
ঘটনার পরই দুয়া লিপা লেভিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন। সূত্রের দাবি, দুয়া মনে করেন তার ম্যানেজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের দমননীতিকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছেন, যা তার নিজস্ব বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীত।
দুয়া লিপা সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে সরব কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত। ২০২০ সালে সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনীর সমালোচনামূলক পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। ২০২১ সালে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ উঠলেও তিনি স্পষ্ট করে জানান- ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকারের পক্ষেই তিনি দাঁড়িয়েছেন।
২০২৩ সালে তিনি গাজার মানবিক সংকট নিয়ে সরব হন এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। ২০২৪ সালে আবারও তিনি গাজার সহিংসতা বন্ধের দাবিতে খোলা চিঠিতে সই দেন। একই বছর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে সরাসরি ‘গণহত্যা’বলেআখ্যাদেন।তারভাষায়, “শিশুদের আগুনে পুড়িয়ে মারা কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না।”
২০২৫ সালে কসোভোর সানি হিল ফেস্টিভালে গান পরিবেশনের সময় মঞ্চে হাতে তুলে ধরেন—“ফিলিস্তিনমুক্তকরো”লেখা।
১৯৯৫ সালে লন্ডনে জন্ম নেওয়া দুয়া লিপার বাবা-মা আলবেনীয়, যারা কসোভো সংঘাতের সময় ব্রিটেনে আশ্রয় নেন। এখন তিনি ব্রিটেন ও আলবেনিয়ার দ্বৈত নাগরিক। সংগীত ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত তিনটি অ্যালবাম থেকে আড়াই কোটির বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। তার সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ১১৫–১৩০মিলিয়নডলার।
সঙ্গীতের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতাকেও সমান গুরুত্ব দিয়ে আসা দুয়া লিপার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে—তিনিশুধুগানেরতারকাইনন, মানবতার পক্ষে অটল এক কণ্ঠও।