রাজনীতি

সীমানা পুনর্নির্ধারণ শুনানিতে হট্টগোল

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া জেলার সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানিকালে দুই গ্রুপের মধ্যে মধ্যে  ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটেছে।  জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ ও বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা

রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) শুনানিকালে এই ঘটনা ঘটে।

মো. আতাউল্লাহর অভিযোগ, তিনিসহ তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলা চালিয়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা ও তাঁর সঙ্গে থাকা দলীয় নেতা-কর্মীরা।

নির্বাচন কমিশন তখন কী করেছেএমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশন তখন আর কাউকে কথা বলতে দেয়নি। বিএনপি ছাড়া শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীকেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি।

রুমিন ফারহানার দাবি, আতাউল্লাহ পরিচিত মুখ নন। তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, তা তিনি জানেন না। প্রথমে তাঁকে (রুমিন ফারহানাকে) ধাক্কা দেওয়া হয়েছে। তারপর তো আর তাঁর লোকজন তো বসে থাকবেন না। তাঁর লোকজনও জবাব দিয়েছেন।

এনসিপির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দাবি হলো, বিজয়নগরকে একত্র রাখা। রুমিন ফারহানা তিনটি ইউনিয়নকে বাগিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। যখন আমরা শুনানি করতে যাই, তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনের সামনে রুমিন ফারহানা ও তাঁর গুন্ডাবাহিনীরা আমাদের ওপর হামলা করে। সবার সামনে আমাদের নিচে ফেলে যেভাবে পিষেছে, তাতে বোঝায়, এ দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন কখনো হবে না।

রুমিন ফারহানা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী (জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল) গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ইসি ভবনে প্রবেশ করেছেন। তিনি (রুমিন ফারহানা) যখন একটা কথা বলার জন্য দাঁড়িয়েছেন, তখন তাঁর গায়ে ধাক্কা দিয়ে তাঁকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছেযে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য তিনি ১৫ বছর লড়াই করেছেন, তাঁরা তাঁকে এখন ধাক্কা দেয়। ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই। সেটাই হয়েছে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে রুমিন ফারহানা বলেন, খালেদা জিয়া সবসময় বলেছেন, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় বিএনপি নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সীমানা একটি ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের স্বার্থে নির্ধারণ করেছে, যা তাঁরা মানেন না। তাই তাঁরা চান, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়া হোক।

জানা যায়,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের খসড়া প্রকাশের পর পক্ষে ও বিপক্ষে আবেদন জমা পড়ে। এটা নিয়েই পক্ষ-বিপক্ষে আজ রোববার শুনানি চলছিল ইসিতে। সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের সামনেই দুপুর পৌনে ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তারপর ইসি কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইসি সচিব আখতার আহমেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের জন্য শুনানি শেষ করেন এবং তাদের শুনারি কক্ষ ত্যাগ করার অনুরোধ জানান।

শুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে তার যুক্তি তুলে ধরেন। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিএনপি নেতা খুরশিদ আলম, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম ও অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেনসহ অন্যান্য বেশ কয়েকজন খসড়ার বিপক্ষে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।

খসড়ার বিপক্ষে থাকা নেতারা শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, বিজয়নগর উপজেলা থেকে তিনটি ইউনিয়ন (বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে। তারা উপজেলা অখণ্ড চায়।

এ নিয়ে তর্ক বিতর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

আই/এ

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #রুমিন ফারহানা