শরীয়তপুরে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত নবজাতককে বহনকারী ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এতে অক্সিজেন স্বল্পতায় পথেই মৃত্যু হয় নবজাতকটির। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নবজাতকের স্বজনেরা জানান, সম্প্রতি শরীয়তপুর শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শিশুটি ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এতে পরিবারের লোকজন গতকাল রাত আটটার দিকে পাঁচ হাজার টাকায় ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেন।
অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলে পথে বাধা দেন স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালক সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান। ওই দুই চালক জানান, তাদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত অন্য কোনো অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় যাওয়া যাবে না। একপর্যায়ে তারা ঢাকাগামী সেই অ্যাম্বুলেন্স চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাবি কেড়ে নেয় এবং তাকে ও রোগীর স্বজনদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে।
শিশুর নানি সেফালী বেগম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। অল্প খরচে ঢাকায় যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করি। কিন্তু স্থানীয় আরেক চালক বাধা দেয়। তারা দাবি করে, বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে যেতে হবে। আমার নাতি চিকিৎসা পায়নি, মারা গেছে। সন্তান জন্মের পর আমার মেয়ে অচেতন হয়ে আছে। তার জ্ঞান ফিরলে কীভাবে খবরটি দেব?’
ঢাকার অ্যাম্বুলেন্স চালক মোশারফ মিয়া বলেন, ‘আমি ঢাকা থেকে ট্রিপ নিয়ে শরীয়তপুরে এসেছিলাম। পরে ফিরতি ট্রিপের জন্য হাসপাতালের পাশেই গাড়ি সাইড করে রাখি। রোগীর লোক ঢাকায় যাওয়ার জন্য আমাকে পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া করে। শিশুটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমি দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দেই। তখন কয়েকজন লোক এসে আমাকে জোর করে কলার ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে চাবি কেড়ে নেয়। আমি তাদের অনুরোধ করলেও ছাড়েনি। এতে বাচ্চাটি গাড়ির মধ্যেই মারা যায়’
পালং থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনো ভুক্তভোগী পরিবারের কোনো হদিস নাই। তারা কোনো অভিযোগ না দিলে আমরাই ব্যবস্থা নেব। অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসব’।
আই/এ