জাতীয়

জুলাই গণঅভ্যুত্থান

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপি মহাসচিবের আহ্বান

গেল বছর ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ১৬ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। সেদিনও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাঈদ।

১৬ জুলাই বিকেলের দিকে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। একপর্যায়ে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় আবু সাঈদ দুই হাত মেলে বুক পেতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন। তখন মাত্র ১৫ মিটার দূর থেকে দুই পুলিশ সদস্য শটগান দিয়ে গুলি করলে তিনি মারা যান। 

এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দেশজুড়ে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। সেদিন ঢাকা কলেজ ও সায়েন্স ল্যাবসহ বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে শাহজাহান (২৪) ও সবুজ আলী (২৫) নামে দুই যুবক নিহত হন। এদিন শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক এবং মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করেন।  

এছাড়া বিভিন্ন মহাসড়কেও অবরোধ করেন ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রামেও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হন। আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এই সহিংসতাকে ‘রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট দমন-পীড়ন’ হিসেবে আখ্যা দেন। আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ১৭ জুলাই দুপুর ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে কফিন মিছিল ও গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

১৬ জুলাই রাতে বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ।

সব মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ এবং ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে সরকার। 

পরিস্থিতি রাজনৈতিকভাবে আন্দোলনের মোকাবিলার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের ১৭ জুলাই সকাল থেকে নিজ নিজ ইউনিট অফিসে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।  

সরকার এ দিনই কোটা বহাল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি) চায়। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দিন সাধারণ মানুষ ও সব রাজনৈতিক দলকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে রাজপথে থাকার ঘোষণা দেয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেদিন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেন।

এদিন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ছয়জন নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানায় পাঁচটি মানবাধিকার সংগঠন। তীব্র নিন্দা জানান ১১৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক।  

 

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #জুলাই #গণঅভ্যুত্থান #বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন