গেল তিনদিনের টানা বর্ষণে নোয়াখালী জেলা শহরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। অনেক বসতবাড়িতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় পানি ঢুকেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক চলাচল।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে মাইজদী শহর ছাড়াও সুবর্ণচর, কবিরহাট, কোম্পানিগঞ্জ ও সেনবাগের বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহাম্মেদ বলেন, পৌর এলাকার ড্রেনগুলোতে ময়লা ও পলিথিন জমে থাকায় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে। এজন্যই অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে।
তিনি আরও জানান, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আজ বসবে। সেখানে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
মাইজদীর ডিসি অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, আদালত চত্বর, সার্কিট হাউস এলাকা, হাউজিং আবাসিক এলাকা ও আল-ফারুক একাডেমী এলাকায় হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে আছে।
লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান জানান, নালা-খাল অপরিষ্কার থাকায় পানি বের হতে পারছে না। ফলে পুরো এলাকা পানির নিচে ডুবে গেছে।
অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পানি তোলার মোটর চলে না। ফোন চার্জ দেয়া যাচ্ছে না। ভীষণ বিপাকে আছি।
নোয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক মো. জালাল উদ্দিন জানান,ডুবে যাওয়া সড়কগুলো থেকে পানি সরাতে নিয়মিত কাজ চলছে। খাল-নালা পরিষ্কারের কাজ বিগত মাসগুলোতে করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জামিল আহমেদ জানান, মেঘনা নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে থাকলেও হাতিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
টানা বৃষ্টিতে কোম্পানিগঞ্জ, সুবর্ণচর ও কবিরহাট উপজেলার নিচু এলাকায় বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
কোম্পানিগঞ্জ ইউএনও তানভীর শামীম জানান, মুছাপুর, চরপার্বতী ও চর এলাহি ইউনিয়নে প্লাবনের কারণে আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে।
কবিরহাট ইউএনও পুদম পুষ্প চাকমা বলেন, ধান শালিক ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে। ৮১ জন ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
সুবর্ণচর ইউএনও রাবেয়া আসফার সায়মা জানান, মোহাম্মদপুর, চরজব্বর ও চর আমান উল্লাহ ইউনিয়নের নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলার প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, জলাবদ্ধতার কারণে নোয়াখালী সরকারি কলেজ, মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ইতিমধ্যে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এসকে//