ইরানিরা কখনো হারে না, ইরানি জাতি কখনো হারতে জানে না। সোমবার কাতারে থাকা মার্কিন ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালায় ইরান। আর এই হামলার পরেই এক আগুন ঝরা ভাষণ দেয় ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী। ৮৬ বছর বয়সী ইরানি এই ধর্মীয় নেতার হুঁশিয়ারি যেন বিদ্যুৎগতিতে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বে। ভয়ে তড়িঘড়ি করে যুদ্ধ বিরতির ডাক দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার রাতে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে খামেনী জানান, ইরান কারও কোন ক্ষতি করেনি। ইরানি জনগণ কোন অবস্থাতেই কোন ধরনের আগ্রাসন মেনে নিবে না। এটাই ইরানি জাতির আসল শক্তি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি আধিপত্যবাদের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী। যিনি ৩৬ বছর ধরে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৩৯ সালের এপ্রিলে উত্তর পূর্ব ইরানের মাশদাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন ইরানি এই সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। ইরাক ও ইরানে পড়াশুনা করা খামেনী মাত্র ১১ বছর বয়সে ধর্মগুরু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর পিতা একজন ধর্ম প্রচারক ছিলেন, যিনি রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারকে সবসময় নিরুৎসাহিত করতেন। তবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী ইসলামী বিপ্লবে বিশ্বাসী ছিলেন। রাজনীতিতে জড়িয়ে ১৯৬৩ সালে প্রথমবারের মত জেলে যেতে হয়েছে তাঁকে। ওই বছরেই মাশদাদ শহরে একটি জেলে তাঁকে ১০ দিনের জন্য বন্দি করে রাখা হয়। সেখানে চলে অমানুষিক নির্যাতন।
এর কয়েক বছর পরে, ১৯৭৯ সালে ইরানে ঘটে ইসলামি বিপ্লব। গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটে শাহ মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভি সরকারের। পরবর্তীতে ইরানের প্রথম ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী।
১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সালে প্রতিবেশি ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের সময় উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসবে দায়িত্ব পালন করেন খামেনী। ১৯৮১ সালে গুপ্তহত্যার চেষ্টার শিকার হন তিনি। এসময় ডান হাত পঙ্গু হয়ে যায় তাঁর। ওই বছরেই ইরানের প্রথম ধর্মীয় নেতা খোমিনির সমর্থনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনী। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালের ৪ জুন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।
এনএস/