দেশজুড়ে

হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত রাজশাহী, ৩ দিন সূর্যের দেখা নেই

রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে টানা তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা, কনকনে ঠান্ডা ও উত্তরের হিমেল বাতাস মিলিয়ে হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অতিপ্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শীতের প্রকোপে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। ভরদুপুরেও অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালমুখী হচ্ছেন মানুষ।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য মাত্র ২ ডিগ্রি। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ। এ কারণেই শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

এর আগে গতকাল রোববার রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বনিম্ন ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে প্রায় ৬ ডিগ্রি।

তীব্র শীতের কারণে রাজশাহী নগরীর সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ব্যবসায়ীরা দেরিতে দোকান খুলছেন, আবার রাত ১০টার পরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নগরীর প্রধান সড়কগুলো। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আগেভাগেই। এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অফিস-আদালতের কাজকর্মেও।

শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে মেডিসিন ও শিশু বিভাগে ভিড় বেশি। পর্যাপ্ত বেড না থাকায় অনেক রোগীকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত শীতজনিত কারণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস।

এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। অভিজাত মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানগুলোতেও বিক্রি জমেছে। সামর্থ্য অনুযায়ী কেউ মার্কেট থেকে, কেউ ফুটপাত থেকে শীতবস্ত্র কিনে শীত মোকাবিলার চেষ্টা করছেন।

তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ। কাজের অভাবে অনেকেই চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। 

 

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন